সিলেটে বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট, অন্ধকারে থাকে পূজামণ্ডপ
গ্রিড বিপর্যয়ে বিদ্যুৎ না থাকায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সিলেট নগরের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল। যেসব দোকান খোলা ছিল, সেগুলোতে মোমবাতি জ্বালিয়ে কিংবা জেনারেটর চালিয়ে ব্যবসা চলছিল। বিপণিবিতান ও দোকানপাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম।
এদিকে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে নবমীর রাতেও পূজামণ্ডপগুলোতেও দর্শনার্থীর ভিড় ছিল কম। নগরের দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, মাছুদিঘিরপাড়, বাগবাড়ি, বালুচরসহ বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপে জেনারেটরের সাহায্যে আলো সরবরাহ করা হলেও আশপাশের রাস্তা ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। আগের দিনের তুলনায় দর্শনার্থীও অনেক কম ছিল। নগরের হাওয়াপাড়া এলাকার একটি পূজামণ্ডপে জেনারেটর সুবিধা না থাকায় মণ্ডপ পুরোপুরি অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া ডিজেল সংগ্রহ করতে ফিলিং স্টেশনগুলোতেও ছিল মানুষের ভিড়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ না থাকায় নগরের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, মির্জাজাঙ্গাল, আম্বরখানা, নয়া সড়ক, জেল রোড, বারুতখানা, সোবহানীঘাট, উপশহর, চৌহাট্টা, মীরবক্সটুলা, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, মীরাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় মালিকেরা সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ করে ফেলেন। অনেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে কিংবা জেনারেটর চালিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তবে ক্রেতা ছিলেন কম। নগরের রাস্তাগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছিল। এ কারণে সড়কে মানুষের চলাচল কমে যায়। রাত নয়টার মধ্যে সিলেট শহরের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো বিপণিবিতানটি অন্ধকার হয়ে আছে। অধিকাংশ দোকানেই মোমবাতি জ্বালানো। বইমেলা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী লিটন আহমদ জানান, সন্ধ্যার পর ২০ থেকে ২৫টি মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। তবে ক্রেতাদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম। একে তো অন্ধকার, এর মধ্যে গরমে তাঁদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে।
নগরের হাওয়াপাড়া এলাকার ঘোষবাড়ির দুর্গাপূজা এবার ১৮৩ বছরে পা রেখেছে। এ বাড়ির সদস্য দীপংকর ঘোষ সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় জানান, তাঁদের মণ্ডপে জেনারেটরের সুবিধা ছিল না। তাই বেলা দুইটার পর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তাঁরা পানিসংকটে পড়েন। সন্ধ্যার পর পুরো বাড়ি ও মণ্ডপ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দর্শনার্থীরা আসছেন না। এ অবস্থায় এখন জেনারেটর ও ডিজেল এনেছেন।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের সোবহানীঘাট এলাকার বেঙ্গল গ্যাসোলিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক শ যানবাহনের চালক ও ব্যক্তি ডিজেলের জন্য সারি বেঁধে রয়েছেন। অনেকে জেনারেটর চালাতে ডিজেল নিতে ড্রাম নিয়ে এসেছেন। বেঙ্গল গ্যাসোলিনের ব্যবস্থাপক মনীন্দ্র কুমার সিংহ জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় বিশেষ করে ডিজেলের চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। আগে প্রতিদিন দুই হাজার লিটার ডিজেলের বিপরীতে আজ চার হাজার লিটার ডিজেলের চাহিদা দেখা দিয়েছে।
উপশহর এলাকার ব্যবসায়ী মাহতাবুর রহমান জানান, বিকেল থেকেই জেনারেটর চালিয়ে তিনি তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু রেখেছিলেন। এখন জ্বালানি শেষ হওয়ায় ডিজেল কিনতে এসেছেন। ভিড় থাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে সবাইকে ডিজেল সংগ্রহ করতে হচ্ছে।