মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেলের পেশা ‘কৃষি, মৎস্য ও পোলট্রি’

আ ক ম মোজাম্মেল হকফাইল ছবি

১৫ বছরে গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তাঁর দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আ ক ম মোজাম্মেল হক এ নিয়ে চতুর্থ দফায় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

২০২৩ সালে জমা দেওয়া হলফনামায় মোজাম্মেল হক পেশা/ব্যবসা দেখিয়েছেন কৃষি, মৎস্য ও পোলট্রি। কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। কিন্তু ব্যবসা থেকে কোনো আয় দেখাননি। মোজাম্মেলের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া সম্মানী, ২৩ লাখ টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তির ঘরে মোজাম্মেল হক উল্লেখ করেছেন, তাঁর নগদ আছে ১০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে আরও ১০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। তাঁর আড়াই লাখ টাকার শেয়ার আছে। এ ছাড়া, সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর পাওয়া দুটি গাড়ি আছে। যার মূল্য তিনি সাড়ে ৭৩ লাখ টাকা বলে উল্লেখ করেছেন।

এর আগে ২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, তাঁর মোট বাৎসরিক আয় ৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা। হাতে নগদ ছিল ৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ছিল। ব্যাংকে জমা দেখিয়েছিলেন ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। শেয়ার ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার। তখন তাঁর নিজ নামে স্বর্ণ ১০ ভরি ও স্ত্রীর নামে ছিল ১৫ ভরি। তবে ২০২৩ সালের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন তাঁর নামে ৭ ভরি স্বর্ণ আছে।

২০০৮ সালে জমা দেওয়া হলফনামায় মোজাম্মেল তাঁর স্থাবর সম্পদ হিসেবে কৃষি জমি দেখান ৩৫ শতাংশ। আর অকৃষি জমি ছিল ১৪ শতাংশ। ১৫ বছরের ব্যবধানে তা বেড়েছে বহুগুণ। বর্তমানে তাঁর ৬৯১ শতাংশ কৃষি ও ১০১ শতাংশ অকৃষি জমি রয়েছে। ২০০৮ সালের হলফনামায় তিনি ৫ লাখ টাকার মূল্যের দুটি ভবনের উল্লেখ করেন। বর্তমানে তাঁর দুটি দালান আছে। এর মূল্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া, আধপাকা একটি টিনশেড ঘর আছে।

মোজাম্মেল আগের তিনটি নির্বাচনে তিনি তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএ- এলএলবি। এবার তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা শুধু বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোজাম্মেল হক তাঁর দাখিল করা হলফনামায় পেশা দেখিয়েছিলেন গাজীপুর জজ কোর্টের আইনজীবী। তখন পেশা থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এবার সে ঘরটি ফাঁকা রেখেছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, এখন তিনি আইন পেশার সঙ্গে জড়িত নেই আর। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ লেখা হয়েছে। গাজীপুর শহরে একটি বাড়ি নির্মাণ করায় এবং সন্তানের লেখাপড়ায় খরচ করায় নগদ টাকা-পয়সা খরচ হয়েছে। আর সম্পদ যেগুলো করেছেন, সেগুলো নিজের আয় থেকে ধীরে ধীরে করা হয়েছে।

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক ২০০৮ সালের আগে গাজীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ২০০৮ সালে তিনি গাজীপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমসহ আরও ছয়জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন– জাতীয় পার্টির নেতা আল আমিন, তৃণমূল বিএনপির চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির জব্বার সরকার, জাকের পার্টি থেকে মানিক সরকার, তরিকত ফেডারেশনের (বিটিএফ) সফিকুল ইসলাম।