যশোরে চাঁদার টাকা না পেয়ে ব্যবসায়ীর চোখে গুরুতর জখম

আহত অবস্থায় সম্রাট হোসেনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর। গতকাল রাতে তোলাছবি: প্রথম আলো

যশোর সদরে চাঁদার টাকা না পেয়ে সম্রাট হোসেন (২৫) নামের এক ব্যবসায়ীর চোখ গুরুতম জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে শহরের চাঁচড়া ডালমিল মাঠপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সম্রাট চাঁচড়া ডালমিল মাঠপাড়া এলাকার আবদুল আলীমের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন কুদরত (২৭), ইমন (২৬), সাকিব (২৬) ও হৃদয় (২৭)। তাঁরাও একই এলাকার বাসিন্দা। কুদরত ও সম্রাট পারিবারিকভাবে আত্মীয়।

পুলিশ ও সম্রাটের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সম্রাট সম্প্রতি চাঁচড়া ডালমিল এলাকায় জমিসহ একটি বাড়ি কেনেন। বাড়িটির আগের মালিক রোজিনা বেগমের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন কুদরতসহ আরও কয়েকজন। চাঁদার টাকা না দিয়ে ভয়ে তিনি বাড়িটি সম্রাটের কাছে বিক্রি করে দেন। সম্রাট গতকাল সোমবার ওই বাড়ি দখলে নিতে গেলে কুদরতের নেতৃত্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সম্রাটকে মারধর করেন। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে সম্রাটের দুই চোখে আঘাত করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সম্রাটকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

সম্রাটের স্ত্রী মুসলিমা খাতুন বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা জমিসহ একটি বাড়ি কিনেছি। ওই জমির আগের মালিকের কাছে একই এলাকার কুদরত, ইমন, সাকিব ও হৃদয় চাঁদা দাবি করেছিলেন। চাঁদা না দিয়ে সম্রাটকে জমি বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান আগের মালিক রোজিনা। ওই জমি দখল করতে গেলে কুদরতসহ অন্যরা এসে হামলা চালান। এ সময় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাঁরা সম্রাটকে ঘরের বাইরে নিয়ে মারপিট করেন। তাঁর দুই চোখ তুলে নিতে চোখের চারপাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন তাঁরা।’

এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাকিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্রাটের বাম চোখের চারপাশে ছুরির অন্তত পাঁচটি আঘাত আছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

এ বিষয়ে আজ দুপুর পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি বলে জানিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন।

অন্যদিকে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মমিনুল হক বলেন, ‘কুদরতসহ অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে পলাতক। তবে কুদরতের মা দাবি করেছেন, যাঁর (রোজিনা) কাছ থেকে সম্রাট বাড়ি কিনেছেন, তাঁর কাছে টাকা পেতেন কুদরত। ওই টাকা না দিয়ে বাড়িটি বিক্রি করে দেন মালিক। আসলেই কুদরত টাকা পেতেন নাকি চাঁদা দাবি করেছেন, সেটি তদন্তের বিষয়।’

পুলিশ জানায়, আহত সম্রাট ও অভিযুক্ত কুদরতের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা আছে।