বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

মারধরে আহত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সোহেল মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দিতে সোহেল মিয়া নামের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে লোহার পাইপ দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে শীলমান্দি ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকার মসজিদসংলগ্ন স্থানে তাঁকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত নিয়ে সোহেল এখন নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে বাবু। তিনি সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও পাঁচদোনা ইউনিয়নের চরমাধবদী এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে। অন্যদিকে আহত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সোহেল মিয়া একই এলাকার মৃত সাইদ মিয়ার ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই মাথায় সমস্যা সোহেল মিয়ার। তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর মা রেজিয়া বেগম ফুফাতো ভাইয়ের দেওয়া দুই শতাংশ জমিতে ঘর তুলে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সোহেলের ছোট ভাই ইমরান মিয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। সোহেল মিয়া মানুষের কাছে এটা-সেটা চেয়ে বেড়ান। তাঁদের চারটি বাড়ি পরই ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি।

আহত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চরমাধবদীর স্থানীয় বাজারের জাকির হোসেনের মুদিদোকানে যান সোহেল মিয়া। এ সময় প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমান দোকানটিতে বিস্কুট খাচ্ছিলেন। সোহেল মিয়া তাঁর কাছে বিস্কুট খেতে চাইলে মোখলেছুর রহমান ধমক দেন। রেগে গিয়ে সোহেল থুতু দেন ও তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। উপস্থিত লোকজন বুঝিয়ে-সুজিয়ে উত্তেজিত মোখলেছুর রহমানকে শান্ত করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোখলেছুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রাতে একদল কর্মী নিয়ে সোহেলের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহেলের মামা বাবুল মোল্লা ক্ষমা চাইতে ওই বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল শুক্রবার সকাল আটটায় পার্শ্ববর্তী শীলমান্দি ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় সোহেলকে একা পেয়ে যান মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় একটি লোহার পাইপ সংগ্রহ করে তাঁর হাতে-পায়ে, সারা শরীরে পেটান তিনি। আশপাশের লোকজন বহু চেষ্টায়ও তাঁকে থামাতে পারেননি। একপর্যায়ে সোহেল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা সোহেলকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার বাবা মোখলেছুর রহমান এর আগে দুইবার স্ট্রোক করেছেন। বিস্কুট না দেওয়ায় সোহেল আমার বাবাকে থাপ্পড় মারে, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এর আগে এলাকার বহু লোককে সে মেরেছে। আমি প্রতিবন্ধী সোহেলের গায়ে হাত তুলিনি।’

পাঁচদোনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক ইউছুফ আহমেদ জানান, এ বিষয়ে তাঁকে কেউ কিছু জানাননি। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগও পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।