যশোরে দুদকের মামলায় শাহীন চাকলাদারের চার বছর কারাদণ্ড
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ৩৮ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে যশোর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম নুরুল ইসলাম এই রায় দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩০ মার্চ দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, শাহীন চাকলাদার ৩৮ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন। দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, তাঁর ট্যাক্স ফাইলে দেখানো সম্পদের পরিমাণ ও দাখিল করা বিবরণীর মধ্যে অসামঞ্জস্য রয়েছে।
শাহীন চাকলাদার তাঁর সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছিলেন, তাঁর মোট সম্পদ ১ কোটি ৯৬ লাখ ২১ হাজার ৪০০ টাকা, যার মধ্যে ১ কোটি ১ লাখ ৯১ হাজার ৫১৫ টাকা দেনা। কিন্তু দুদকের তদন্তে উঠে আসে, তাঁর প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬৮৫ টাকার সম্পদ গোপন করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি তদন্ত শেষে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান শাহীন চাকলাদার। আজ আদালতের রায় ঘোষণার সময় শাহীন চাকলাদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এ বিষয়ে জানতে দুদকের বিশেষ পিপি সিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দুদকের উপপরিচালক আল আমিন বলেন, ‘পিপি সাহেব আমাকে জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের একটি মামলায় আদালত শাহীন চাকলাদারকে চার বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় শাহীন চাকলাদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।’
এদিকে গত বছরের ১৬ অক্টোবর দুদকের আবেদনের পরিপেক্ষিতে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শাহীন চাকলাদারসহ পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা অন্যরা হলেন শাহীন চাকলাদারের স্ত্রী ফারহানা জাহান (মালা), দুই মেয়ে সামিয়া জাহান (অন্তরা), মাঈসা জাহান (অহনা) ও ছেলে জাবীর চাকলাদার।
দুদক যশোর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০০৮ সালে শাহীন চাকলাদারের সম্পদের পরিমাণ ছিল কম। ১৬ বছরে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে একই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। দুটি মামলার অভিযোগ একই—জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন। শুধু সময়টা ভিন্ন।