জমি দখল নিয়ে রূপগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ছররা গুলিতে ১০ জন বিদ্ধ

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছোড়া ছররা গুলিতে নারী, শিশুসহ ১০ জন বিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের রাজধানীর দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) আবির হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, রাতে রূপগঞ্জের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের গায়ে ছররা গুলি লেগেছে। তবে তাঁরা শঙ্কামুক্ত।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধরা হলেন জাকির হোসেন (৫০), মো. জুম্মন (১১), আল-আমিন (২৭), আবুল হোসেন (৪২) ও মোসা. মারুফা (১৮)। তাঁরা কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক সদস্য মোশাররফ হোসেনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

গুলিবিদ্ধ আরও পাঁচজনকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজন একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাঁরা হলেন মো. রুবেল (৩০), মো. নাইম (২২), নূর হোসেন (২৪), মো. ফয়সাল (৩৫) ও মো. হানিফ (২৪)।

পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কায়েতপাড়া এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও এলাকার জমি দখলকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবং সাবেক ইউপি সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জেরে গতকাল মোশাররফ হোসেন ও রফিকুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয় পক্ষের নারী, শিশুসহ অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও কয়েকজন। পরে রূপগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে মোশাররফ হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় মোশাররফের লোকজন একটি কোম্পানির পক্ষে কিছু জমিতে সাইনবোর্ড বসিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই জমির মালিক ও এলাকাবাসী এসে তাঁদের বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোশাররফের লোকজন গ্রামবাসীর ওপর হামলা করেন। হামলায় অনেকেই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান মিজানুর।

ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে নাওরা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।