উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার শিক্ষক সমিতির প্রতীকী অনশনের ঘোষণা

উপচার্য ও সহউপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন একজন শিক্ষক। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনেপ্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার ও সহ–উপাচার্য বেনু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে এবার প্রতীকী অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি। আজ বুধবার দুপুরে এ ঘোষণা দেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী।

পদত্যাগের এক দফা দাবিতে তিন দিন ধরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক সমিতি। ওই ভবনে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে।

আজ তৃতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু হয় বেলা সাড়ে ১১টায়। চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।

অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল চেয়েছিল শিক্ষক সমিতি। গত রোববার এ দাবিতে চিঠি দিলে উপাচার্য ও সমিতির সদস্যদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ বিতণ্ডার মধ্যেই আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষক সমিতি। ওই দিনের পর থেকে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। পরে সমিতির আন্দোলনের মুখে সোমবার বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ।

আজ তৃতীয় দিনের কর্মসূচি ছিল। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আজ শিক্ষকেরা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বক্তব্য দেন। বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, বাংলা বিভাগের নিয়োগ সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যা নিয়ম আছে তা অনুসরণ করে। উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতাবলে নয়।

ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের অধ্যাপক জাহেদুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত যে এর প্রতিবাদ না করে তাঁরা শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়াতে পারছেন না। প্রশাসন যখন অনাচার করতে চায়, তখন অন্য কাজ বাদ দিয়ে প্রতিবাদ না করলে ছাত্রদের সামনে দাঁড়ানো যায় না। এ কারণেই তিনি এ অবস্থান কর্মসূচিতে এসেছেন।

কলা অনুষদের সাবেক ডিন মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, শিক্ষক সমিতি কারও ব্যক্তিগত অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংগতি চলছে দেখেই সমিতি প্রতিবাদ করছে। নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক দাবি নিয়েই সমিতি এসেছে। সমিতির দাবিগুলো যৌক্তিক। এ যৌক্তিক দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে।

সমিতির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, তাঁরা ন্যায়ানুগ কর্মসূচির মধ্যে আছেন, ন্যায়ের পক্ষে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এ ভাবমূর্তি উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যের পদত্যাগের মধ্যে দিয়েই ফিরে আসবে। পদত্যাগের এক দফা দাবিতে তাঁরা আগামীকাল দুই ঘণ্টা প্রতীকী অনশন করবেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন সিরাজ উদ দৌল্লাহ, প্রকৌশল অনুষদের ডিন রাশেদ মোস্তফা, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ নাসিম হাসান ও প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মু. গোলাম কবীর।