ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সুমনের মরদেহ ১৭৪ দিন পর উত্তোলন

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সুমন ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সুমন ইসলামের (২১) মরদেহ দাফনের ৫ মাস ২৪ দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের আমিননগর-বকশীগঞ্জ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি তোলা হয়।

এ সময় বোদা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফুয়াদ, বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দীন, ঢাকার আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম, সাকোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ও নিহত সুমনের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

সুমন বোদার আমিননগর-বকশীগঞ্জ এলাকার হামিদ আলীর একমাত্র ছেলে। চার ভাই–বোনের মধ্যে সুমন ছিলেন সবার ছোট। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন বিকেলে ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সুমন। ৭ আগস্ট বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুমনের লাশ খুঁজে পান স্বজনেরা। ৮ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে সুমনকে দাফন করা হয়।
মৃত্যুর প্রায় এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর সুমনের মা কাজলী বেগম বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ ও ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বড় তিন বোনের বিয়ের পর বৃদ্ধ মা-বাবার একমাত্র অবলম্বন ছিলেন সুমন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ দিনমজুর বাবা কাজ করতে পারতেন না। তাই দাখিল পাস করেই সুমন পাড়ি জমিয়েছিলেন ঢাকায়। কাজ নিয়েছিলেন ইপিজেডে। ৫ আগস্ট বিকেলে ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের লোকজন আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান। এ সময় বাদীর ছেলে সুমন ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

ঢাকার আশুলিয়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত সুমন ইসলামরে মায়ের করা হত্যা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনি বাধ্যবাধকতা ও আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য সুমনের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে আবার হস্তান্তর করা হবে।