শ্রমিকদের দেখে ভয়ে পালাল মা মেছো বিড়াল, পরে ধানখেত থেকে দুই ছানা উদ্ধার

নেত্রকোনায় ধানখেত থেকে উদ্ধারকৃত মেছো বিড়ালের ছানা দুটির একটি। গতকাল নেত্রকোনা পৌরসভার চকপাড়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনায় একটি ধানখেত থেকে দুটি মেছো বিড়ালের ছানা উদ্ধার হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোনা পৌরসভার চকপাড়া এলাকার রেললাইনের পাশ থেকে এগুলো উদ্ধারের পর বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথের পাশে চকপাড়া এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটছিলেন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে বেলা তিনটার দিকে ধানখেত থেকে একটি মা মেছো বিড়াল দৌড়ে পালিয়ে যায়। আর তার দুটি ছানা খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসে।

ওই সময় শ্রমিকেরা মিলে ছানা দুটিকে আটক করেন। এর মধ্যে কয়েকজন কিশোর এগুলোকে মেরে ফেলতে চায়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে পাশের চায়ের দোকানদার মাসুদ মিয়া এগিয়ে গিয়ে বাধা দেন। পরে এগুলো তিনি একটি লোহার খাঁচায় আবদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পরিবেশ ও বন্য প্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং ও নেত্রকোনা পেট রেসকিউ টিমের স্বেচ্ছাসেবকেরা সেখান থেকে ছানা দুটিকে উদ্ধার করেন। পরে এগুলোকে বন বিভাগের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন আবুল হাসান বলেন, ধানখেতে একটি বড় মেছো বিড়ালসহ মোট তিনটি ছানা ছিল। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে মা মেছো বিড়াল ও একটি ছানা দৌড়ে পালিয়ে চলে যায়। এ সময় শ্রমিকদের হাতে ধরা পড়ে অন্য ছানা দুটি।

মেছো বিড়াল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় জানিয়ে নয় সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসংয়ের সভাপতি রিফাত আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছানা দুটিকে পর্যবেক্ষণ শেষে উদ্ধার করা এলাকার আশপাশে অবমুক্ত করা হবে। সম্ভবত এর আশপাশেই তাদের মা মেছো বিড়ালটি অবস্থান করছে। ধানখেতটির এক পাশের নদী এবং অন্য পাশে বেশ কিছু পুকুর ও জলাশয় আছে। এমন পরিবেশে মেছো বিড়ালের থাকাটা একেবারেই স্বাভাবিক। এরা জলাশয়ের ধারেই বসবাস করে এবং মাছের সঙ্গে সরীসৃপ–জাতীয় বিভিন্ন প্রাণী খেয়ে বেঁচে থাকে।

এর আগে গত রোববার দুর্গাপুর উপজেলার বালিকান্দি গ্রাম থেকে আরও দুটি মেছো বিড়ালের ছানা উদ্ধারের পর বনে অবমুক্ত করা হয়।