পাহাড় কেটে বালু বিক্রি করছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা

পাহাড় কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বালু। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের গুরগুরি পশ্চিমপাড়া ডলুঘোনার ডালা এলাকায়ছবি - প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের গুরগুরি পশ্চিম পাড়া ডলুঘোনার ডালা এলাকায় একটি পাহাড় কেটে বালু বিক্রি চলছে। সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার নির্দেশে প্রায় দুই মাস ধরে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ নুরুল আলম। তিনি উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তবে পাহাড় কাটার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়কের ফুলতলা এলাকার সামান্য পশ্চিমে গেলেই দক্ষিণে একটি কাঁচা সড়ক বয়ে গেছে। সড়কটির প্রায় দেড় কিলোমিটার ভারী যানবাহন চলার কারণে প্রায়ই ধুলায় আচ্ছন্ন থাকে। সেটি পার হওয়ার পর পাহাড় কেটে নির্মাণ করা একটি সড়ক ধরে গেলেই পশ্চিম পাড়া ডলুঘোনার ডালা। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দুই দিকে দুটি পাহাড়। একটি পাহাড়ের এক পাশ কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে পাহাড়ের ওই অংশটি কেটে ফেলা হয়েছে। বেশির ভাগ সময় রাতে পাহাড় কাটা হয়। কেটে ফেলা অংশ থেকে অন্তত ১০০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়েছে। ডাম্প ট্রাকে করে বালু নিয়ে যাওয়া হয়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আলমের নির্দেশে পাহাড় কাটা চলছে বলে জানান বাসিন্দারা।

কাঞ্চনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও নুরুল আলমের নির্দেশে পাহাড় কাটা চলছে বলে জানান।

তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বালু বিক্রির জন্য পাহাড় কেটে বিরানভূমি করে ফেলা হচ্ছে। সড়কটিতেও ধুলাবালু ছাড়া আর কিছু নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাঞ্চনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাটি ব্যবসার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। গত বর্ষা মৌসুমে ওই পাহাড়ের কিছু অংশ ধসে পড়েছিল। স্থানীয় লোকজন পাহাড়ের ধসে পড়া বালু কেউ কেউ নিজেদের কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ে গেছেন। ফসলের খেতে যাওয়ার রাস্তা তৈরির জন্যও স্থানীয় কৃষকেরা ওই পাহাড়ের বালু ব্যবহার করেছেন।’

জানতে চাইলে বন বিভাগের মাদার্শা কার্যালয়ের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মামুন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাঞ্চনার কোথাও বন বিভাগের ভূমি নেই। এরপরও পাহাড় কাটার বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাহাড় কেটে বালু বিক্রির বিষয়টি আমাদের কেউ জানাননি। পাহাড় কাটার বিষয়টি তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’