‘জ্ঞানকে সমাজের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে’

লক্ষ্মীপুরে আয়োজিত শিখো-প্রথম আলো জিপিএ–৫ কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে লক্ষ্মীপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

‘শুধু নিজের জন্য জ্ঞানার্জন নয়, জ্ঞানকে সমাজের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। মানুষের সেবায় নিয়োজিত জীবনই প্রকৃত অর্থে সফল জীবন। শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কেবল কর্মই মানুষকে মহান করে তোলে।’

আজ সকালে লক্ষ্মীপুরে শিখো-প্রথম আলো আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাসিবুল ছিদ্দিক। লক্ষ্মীপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বরে আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের।

অনুষ্ঠানে ছবি তুলছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। আজ সকালে লক্ষ্মীপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন। শিক্ষার্থীদের হইহুল্লোড়, আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উৎসবে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক অভিভাবক ও সুধীজন।

‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। লক্ষ্মীপুরের অনুষ্ঠানে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫৫০ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর আগে তাঁরা অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে চলে বন্ধুসভার সদস্য ও কৃতী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
ছবি: প্রথম আলো

সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। এরপর রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি এ বি এম রিপন। তিনি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এরপর শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে মঞ্চে আসেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন পাঠান, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাসিবুল ছিদ্দিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য মোহাম্মদ সেলিম মুন্সি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে চলে বন্ধুসভার সদস্য ও কৃতী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, ‘তোমরা আজ কৃতিত্ব অর্জন করেছ, কিন্তু এটিই শেষ নয়। জ্ঞানের পথে হাঁটতে হলে প্রতিদিন নতুন করে শিখতে হবে, প্রতিদিন নতুন করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। সফল মানুষ তারাই, যারা ব্যর্থতাকে ভয় পায় না। ব্যর্থতা হলো নতুন করে শুরু করার শক্তি, আর প্রতিটি হোঁচটই সাফল্যের দিকে আরেকটি ধাপ।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছবি তুলছে কয়েকজন শিক্ষার্থী
ছবি: প্রথম আলো

অভিভাবকদের একজন মাহাবুব রশীদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তোমরা এই সমাজের, এই দেশের গর্ব। সততা, নৈতিকতা আর মানবিকতা ধরে রাখলে একদিন তোমাদেরই এই দেশের নেতৃত্ব দিতে হবে। জীবনে ভালো কিছু করার জন্য স্বপ্ন দেখতে হবে তোমারদের। স্বপ্ন সফল করতে সব সময় চেষ্টা করতে হবে।’

দীঘলী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম খান বলে, ‘আজকের এই সংবর্ধনা আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। শিক্ষকদের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা আমাকে আগামী দিনে আরও সাহসী করে তুলবে। আমি চাই আমার অর্জন দিয়ে একদিন পরিবার, কলেজ আর দেশের নাম উজ্জ্বল করতে।’

পুরস্কার হাতে অনুষ্ঠানের মঞ্চে কুইজ বিজয়ীরা
ছবি: প্রথম আলো

প্রিন্সিপাল কাজী ফারুক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুবাহ নুর বলেন, ‘সংবর্ধনা শুধু আনন্দ নয়, এটি আমার কাছে বড় দায়িত্ব। আমি চাই ছোট ভাইবোনেরা আমাকে অনুসরণ করে অনুপ্রাণিত হোক। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে এ সম্মান আমাকে সঠিক পথে চলার শক্তি দেবে।’

বুথের সামনে শিক্ষার্থীদের সারি
ছবি: প্রথম আলো

আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা-গ্রি এবং সহযোগিতায় ছিল কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।