সড়কের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন লোকজন। সম্প্রতি নীলফামারীর ডোমার-বসুনিয়ার হাট সড়কের আরডিআরএস মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীর ডোমার-বসুনিয়ার হাট সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয় দুই বছর আগে। প্রায় এক বছর ওই সাত কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে বেহাল সড়কে চলাচলে ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বসুনিয়ার হাট ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতিদিনই ওই পথে ভারী যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে পরিবহন খরচ বেশি গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। দুই বছর আগে সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা আশায় ছিলেন ভোগান্তি দূর হবে। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে ভালো সড়কও ভেঙে বিছানো হয়েছে ইটের খোয়া ও বালু। আবার কোথাও সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। এখন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে। প্রায়ই ওই সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা।

গত বুধবার দুপুরে কথা হয় ওই সড়কের জাল্লির মোড় এলাকার বাসিন্দা এনামুল হকের (৪৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুই বছর থাকি রাস্তাটা এমন হইছে। তিন বছর আগত টেন্ডার নিছে, তারপর ভালো রাস্তাটা ভাঙ্গি খোয়া বিছাইছে, বালা দিছে। আর ভাঙা রাস্তাটা ফেলে থুইছে। হামরা জনগণ মইরলে তার পর রাস্তা ভালো হইবে।’

একই ভোগান্তির কথা জানালেন ডোমার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম চিকনমাটি গ্রামের বাসিন্দা দুলাল ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কটির কাজ শুরুর আগে কিছু অংশ ভাঙা থাকলেও বেশির ভাগ অংশ চলাচল করার মতো ছিল। ঠিকাদার কাজ শুরু করলেন ভালো রাস্তায়। ভালো রাস্তা ভেঙে খোয়া ও বালু বিছানো হলো। আর ভাঙা অংশ পড়ে থাকল। এখন খোয়া বিছানোর কারণে ভালো রাস্তাটাও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখন ঠিকাদারের লোকজনকেও খুঁজে পাওয়া যায় না। রাস্তাটা আদৌ ঠিক হবে কি না জানি না।

উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের খাটুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আনছারুল ইসলাম (৪৫) বলেন, ‘বসুনিয়া একটি প্রসিদ্ধ হাট। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এই এলাকার ছেলেমেয়েরা ডোমারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। প্রতিদিন এ পথে ১০ সহস্রাধিক মানুষ চলাচল করে। সড়কটির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ভাঙা সড়কে ধুলাবালু হতো। এখন বৃষ্টির সময় কাদাপানিতে সয়লাব। জাল্লির মোড় থেকে ডোমার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের প্রায় সম্পূর্ণ সড়কটি গর্তে ভরা।

এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নিজাম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ডোমার উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৬ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ওই সড়ক সংস্কারে ২০২১ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইউনিক কনস্ট্রাকশন জেভি। ২০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি করতে তারা চুক্তিবদ্ধ হন। ২০২১ সালের ১৪ জুলাই কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে কাজ বন্ধ রাখে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তাক আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত ওই সড়কে কাজের অগ্রগতি ৩০ শতাংশ। কাজের অগ্রগতির তুলনায় বিল কম দেওয়া হয়েছে। মূলত বিটুমিনের দাম বাড়ার কারণে ঠিকাদার এত দিন কাজটি বন্ধ রেখেছিলেন। এখন বিটুমিনের দাম কমায় তাঁরা চলতি মাসে কাজ শুরু করবেন।