তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে জটিলতার অবসান, সম্মেলনে অংশ নেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির দুই পক্ষ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা দূর হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি দুই দফায় জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এক পক্ষের বিরোধিতার জেরে দুটি তারিখই পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি ও নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হকের নেতৃত্বে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বড় একটি অংশ এক পক্ষে। তাঁরা দুজনই জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। অন্যদিকে আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম ও সদস্য কবির আহমেদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে আরেক পক্ষ সক্রিয়। প্রায় দুই বছর ধরে পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছে দুই পক্ষ।
হাফিজুর ও জহিরুলের পক্ষের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, জেলার ১৪টি ইউনিটের ত্যাগী, আন্দোলন-সংগ্রামে কারাভোগ করা নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা না করে অপর পক্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়। এ জন্য ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় সম্মেলন বাতিলের দাবিতে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ মিছিল, মশাল, ঝাড়ু ও জুতামিছিল করেছেন তাঁরা। অন্যদিকে সম্মেলন সফল করতে মিছিল করেন অপর পক্ষের নেতা-কর্মীরা।
জেলা বিএনপির অন্তত চারজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলন নিয়ে দুই পক্ষের কর্মসূচির জেরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভার্চ্যুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হকের সভা হয়। সভায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। জহিরুল হক দলে চলমান নানা অসংগতিসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রেখে প্রশ্নবিদ্ধ ভোটার তালিকা করে জেলা বিএনপির সম্মেলন করার বিষয়টি তুলে ধরেন। সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন সফল করার নির্দেশ দিলে তাঁরা সম্মত হন।
জানতে চাইলে জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল সভায় তাঁর এক ঘণ্টা কথা হয়েছে। আলোচনায় স্বচ্ছ ভোটার তালিকা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। প্রশ্নবিদ্ধ ভোটার তালিকা দিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন না করার দাবি জানিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর তাঁদের আস্থা আছে বলে জানিয়েছেন। তিনি দ্বিতীয় অধিবেশনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সম্মেলনে যাব। সম্মেলন কোন স্থানে হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে আজ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের পুনিয়াউট এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব ওরফে শ্যামলের বাসায় হাফিজুর রহমান মোল্লা, জহিরুল হকসহ তাঁদের পক্ষের নেতারা সম্মেলনের বিষয়ে সভা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মঈনুল হোসেন বলেন, সভায় সম্মেলন সফল করার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা খালেদ হোসেন নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন।’