চৌগাছায় মুখোমুখি অবস্থানে আ.লীগের দুই পক্ষ, পৃথক সমাবেশ, উত্তেজনা

গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ যশোরের চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক পক্ষের প্রতিবাদ সমাবেশ। রোববার উপজেলা সদরের ভাস্কর্যের মোড়ে
ছবি: সংগৃহীত

যশোরের চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার উপজেলা সদরের ভাস্কর্যের মোড়ে একই সময়ে দুই পক্ষ পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে। এতে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন এবং অন্য পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে পাশাপাশি দুটি মঞ্চে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে দুই পক্ষ। সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন নিজেই তাঁর পক্ষের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম মিয়ার সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তানিচুর রহমান ও চৌগাছা পৌরসভার মেয়র আবদুলাহ আল মামুন।

অন্য অংশের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ বি এম আহসানুল হক। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ। সমাবেশে উভয় পক্ষের বক্তারা একে অপরকে ঘায়েল করে বক্তব্য দেন। এতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের বদলে বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয়।

সংসদ সদস্যের পক্ষের উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। রোববার যশোরের চৌগাছা উপজেলা সদরের ভাস্কর্যের মোড়ে
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে দলীয় বিরোধ গ্রামপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দেখা দেয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার সময় উপজেলার সিংহঝুলি বাজারে সংসদ সদস্য পক্ষের কয়েকজনের ওপরে হামলা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে তিনজন আহত হয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

দুই পক্ষের বিরোধের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ বি এম আহসানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সংসদ সদস্যের কোনো পদ-পদবি নেই। তিনি বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে অনুষ্ঠান করেছেন। তাঁর অনুষ্ঠানের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। সংসদ সদস্যের লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের অনুসারীরাই তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছেন।

সংসদ সদস্যের পক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দুর্নীতির প্রশ্রয় না দেওয়ায় তাঁরা সংসদ সদস্যকে কোনো অনুষ্ঠানে ডাকেন না। এ জন্য তাঁরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন।

একই জায়গাই দুই পক্ষের কর্মসূচির ব্যাপারে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এটা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল। মূলত একই জায়গায় অনুষ্ঠান করলেও সেখানে দূরত্ব ছিল। এ ছাড়া এক পক্ষ অনুষ্ঠান আগে শুরু করে। এতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।