জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে বিড়াল রাখায় নিষেধাজ্ঞা প্রশাসনের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলে বিড়ালসহ অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী রাখায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হল প্রশাসন। সোমবার ছাত্রীদের ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুরশেদা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহানারা ইমাম হলের অভ্যন্তরে কোনো কোনো ছাত্রী বিড়াল পোষেন। এর ফলে অসুবিধা হচ্ছে বলে অন্য অনেক ছাত্রী অভিযোগ করেছেন। এ কারণে যাঁরা বিড়াল বা অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী পুষছেন, তাঁদের আগামী ৫ জুনের মধ্যে সেসব প্রাণী হলের বাইরে রেখে আসার জন্য বলা হলো। ৬ জুন থেকে হল প্রশাসন ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিড়াল ও অন্য চতুষ্পদ প্রাণী সরাতে ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নজরুল নাঈম প্রথম আলোকে বলেন, পোষা প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সহাবস্থান প্রাকৃতিক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রায় সব শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধ রয়েছে। তবে আবাসিক হলগুলোতে যখন পোষা প্রাণী পালন করা হয়, তখন মাঝেমধ্যে বিপত্তি বাধে। কারণ, একটি হলের সবাই তো বিড়াল পছন্দ করেন না। আবার বিড়াল তো বেঁধে পালন করা যায় না। অনেক সময় একজনের পোষা বিড়াল অন্যজনের কক্ষে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি করে।

জাহানারা ইমাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লামিয়া জান্নাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিড়াল আমার নিজেরও ভালো লাগে। কিন্তু হলের ভেতরে থাকা কোনো কোনো বিড়াল অন্য বিড়ালের বাচ্চা পেলে মেরে ফেলে। এতে হলের মধ্যে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। আবার বিড়াল যেখানে–সেখানে মলত্যাগ করে রাখে বা বমি করে। মাঝরাতে মাঝেমধ্যে চিৎকার করে, যাতে ঘুমের সমস্যা হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মুরশেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলে থাকা বিড়াল অনেক সময় ছাত্রী ও কর্মচারীদের আঁচড় দেয়। এ ঘটনায় কয়েকজন আমাকে অভিযোগ দিয়েছেন। যেসব ছাত্রী আবাসিক হলে বিড়াল পুষছেন, তাঁরা যাতে আর হলে বিড়াল না পোষেন, সে বিষয়ে আমি তাঁদের জানিয়েছি। বিড়ালগুলোর কারণে হল ও ডাইনিংয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সবার কথা চিন্তা করে একরকম বাধ্য হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা মো. শামসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কুকুরে কামড়ানো ও বিড়ালে আঁচড় দেওয়ার ঘটনায় মাঝেমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেলে আসেন। এসব প্রাণীর কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বা অ্যালার্জি রোগ আছে, তাঁদের বিড়াল থেকে দূরে থাকা উচিত। বিড়ালের লোম শ্বাসকষ্ট বাড়াতে পারে।