কুষ্টিয়ায় স্ত্রী-সন্তানদের কুপিয়ে গৃহকর্তার আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন এক ব্যক্তি। এ সময় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ত্রী মারা যান।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত ১২টার দিকে মারা যান ওই নারী।
পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বামীকে চিকিৎসারত অবস্থায় আটক দেখানো হয়েছে। মারা যাওয়া মেঘলা (২৩) হরিশংকরপুর এলাকার মামুনের (২৮) স্ত্রী। আহত অন্যরা হলেন মামুন নিজে ও তাঁর দুই শিশুসন্তান কুলসুম (৪) ও জান্নাত (২)।
পুলিশ, পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামুন পেশায় রংমিস্ত্রি। এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী মেঘলার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। অন্য পুরুষের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান বলে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসা বৈঠকও হয়। তবে বিষয়টি মামুন কোনোভাবেই মানতে পারেননি। গতকাল রাতে স্ত্রী ও তাঁর দুই মেয়ে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁদের এলোপাতাড়ি জখম করতে থাকেন মামুন। একপর্যায়ে স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান মারা গেছে ভেবে নিজেও গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেন। পরে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মেঘলা।
মামুনের মা সুফিয়া বেগম বলেন, তিনি বড় নাতনিকে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছোট দুই নাতনি বাড়িতেই ছিল। রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন এই অবস্থা।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, শিশু দুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্য কোনো হাসপাতালে পাঠানোর মতো অবস্থাতেও নেই। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, রাত ১২টার দিকে মেঘলা মারা গেছেন। মামুনকে আটক দেখানো হয়েছে। থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।