শিকারিদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া লজ্জাবতী বানর হস্তান্তর করা হলো সাফারি পার্কে

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বানরটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের দুর্গম বনাঞ্চল থেকে শিকারিদের কাছ থেকে বিপন্ন প্রজাতির একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। পরে বন বিভাগের মাধ্যমে বানরটি কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে স্থানীয় শিকারিরা বাঁশঝাড় থেকে লজ্জাবতী বানরটি ধরে ফেলেন। বিষয়টি জানতে পেরে উজীপাড়ার মুরগি খামারের মালিক উক্যনু মারমা শিকারিদের বুঝিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বানরটি উদ্ধার করেন। পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বানরটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা অভিজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, পুরুষ লজ্জাবতী বানরটি তাঁরা উজীপাড়া থেকে নিয়ে এসেছেন। বানরটির উচ্চতা ১৫ ইঞ্চি ও ওজন প্রায় দেড় কেজি। বানরটির পুরো শরীরে বাদামি রঙের পশম আছে। তবে পিঠের শীর্ষে কালো রঙের ছোপ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া লজ্জাবতী বানরটির বয়স কম। কারণ, একটি পূর্ণ বয়সের লজ্জাববতী বানর চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের হয়ে থাকে।

খামারি উক্যনু মারমা বলেছেন, শিকারিরা গত সোমবার রাতে লজ্জাবতী বানরটি উজীপাড়া থেকে আট কিলোমিটার দূরের একটি বন থেকে শিকার করেন। শিকারিরা বানরটি খাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। পরদিন তিনি সংবাদ পেয়ে বানরটি উদ্ধার করেন।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সুপ্রিয় চাকমা জানান, লজ্জাবতী বানর এখন বিপন্ন প্রজাতির ও আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত একটি প্রাণী। উদ্ধার করা বানরটি যেখানে পাওয়া গেছে, সেখানেই উম্মুক্ত করে দেওয়া উচিত। ওই এলাকাতেই বানরটির পরিবারের সদস্যরা থাকতে পারে। বনভূমি উজাড় হওয়ার কারণে বাসস্থান ও খাদ্যসংস্থানের সংকটে লজ্জাবতী বানর বিপন্ন হয়ে পড়েছে। নিশাচর প্রাণীটি মানুষের সংস্পর্শ পেলে মুখ ঢেকে থাকে।

তবে বান্দরবানের পাল্পউড বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান বলেন, উদ্ধার হওয়া লজ্জাবতী বানরটি দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উন্মুক্ত করে দিলে বানরটির বেঁচে থাকা কঠিন হবে। এ জন্য বানরটি কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বানরটি তার সঙ্গী খুঁজে পাবে।