ছাত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, বিদ্যালয়ে তালা

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানির পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ করেন অভিভাবকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান। এ জন্য আজ ওই বিদ্যালয়ে নির্ধারিত অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশপিয়া তাসরিন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম ও বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে যান। এ সময় তাঁরা বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং শ্রেণিকক্ষের তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেননি। বাধ্য হয়ে বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই কর্মকর্তারা।

কাশপিয়া তাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, অভিভাবকেরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষকের শাস্তি চান। তাঁরা অভিভাবকদের জানিয়েছেন, তদন্তে ওই ব্যক্তির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এটা বুঝতে চান না। এ জন্য তাঁরা বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেননি। তিনি প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের লিখিত বক্তব্য নিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ১১ জুন এক ছাত্রীকে মুঠোফোনে কুপ্রস্তাব দেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ওই মুঠোফোনের কল রেকর্ড এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়।

আজ বেলা একটার দিকে ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশপিয়া তাসরিনের কাছে বিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রী, দুজন সহকারী শিক্ষক ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর মাসহ তিনজন অভিভাবক লিখিত বক্তব্য দেন। লিখিত বক্তব্যে দুই ছাত্রী বলে, ‘হেড স্যার খুব খারাপ মানুষ। ক্লাসে এলেই আমাদের গায়ে হাত দেন।’

বিদ্যালয়ের দুজন সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, আগেও একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছিল। প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিভাবকেরা তালা খুলে না দেওয়ায় আজকের অর্ধবার্ষিকের গণিত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বলেছি, এটি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসবেন না। কিন্তু এতেও বিক্ষুব্ধ লোকজন বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেননি।’