‘নয়া কম্বল পায়া ভালোই হইল বাহে’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নে ১৫০ জন শীতার্ত মানুষকে একটি করে কম্বল দেওয়া হয়। শনিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

নিজের ভিটে নেই। সহিতুন বেওয়া (৭০) বাস করেন অন্যের বাড়িতে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। সহিতুন বললেন, ‘বাফো মিছা কতা কইম না। মোর একখান কম্বল আছে, কম্বলটাত চাইরটা ফুটা, ফুটা দিয়া হির হির করি হিয়াল (শীত) স্যান্দায়। চোপরাইত নিন্দ পারির পাও নাই। আইজ তোমরা নয়া কম্বল দিনেন, খুব ভালো নাগেছে মোর। নয়া কম্বল পায়া ভালোই হইল বাহে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সহায়তায় কম্বল পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সহিতুন। তিনি বাস করেন নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের নদীরপাড় গ্রামে। শনিবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের টুপামারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নীলফামারী বন্ধুসভার আয়োজনে ১৫০ শীতার্ত মানুষকে একটি করে কম্বল উপহার দেওয়া হয়। কম্বল পেয়ে খুশি শীতার্ত ব্যক্তিরা।

মোহাম্মদ আলী (৮০) নদীরটারী গ্রামের বাসিন্দা। থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। আত্মীয়স্বজনের সাহায্য-সহযোগিতায় খাওয়া-পরা চলে। কিন্তু তাঁর ছিল না একটাও ভালো কম্বল। নতুন কম্বল পেয়ে তিনি বন্ধুসভা ও প্রথম আলোর জন্য হাত তুলে দোয়া করেন।

মেরুবন সোনারবার্নি গ্রামের ননীবালা রায় (৭৫) বলেন, ‘এত ভোট ভাটালি আইসে। কিন্তু হামার পেখে ক্যায়ো দ্যাখে না। প্রথম আলো মোক কম্বল দিছে। আইতত চিড়া দাগলা (কাঁথা) গাত দিয়া শুতি আছিনু। আইজ মুই খুব খুশি বাহে।’

নীলফামারী বন্ধুসভার সভাপতি রুবী আক্তারের সভাপতিত্বে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নীলফামারী বন্ধুসভার প্রধান উপদেষ্টা মীর মাহমুদুল হাসান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন টুপামারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মোরশেদা বানু, টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকির। তিনি বলেন, প্রথম আলো ট্রাস্ট অনেক সামাজিক ও জনহিতকর কাজ করে, যা তাঁদের জন্য অনুকরণীয়।

এর আগে দুদিন ধরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রকৃত শীতার্তদের খুঁজে স্লিপ দিয়ে আসেন বন্ধুসভার সদস্যরা। বিতরণ কাজে অংশ নেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক রাব্বী শাহ, সহসভাপতি নিপুণ রায়, প্রচার সম্পাদক রাইসুল ইসলাম, জেন্ডারবিষয়ক সম্পাদক সাজিদ হোসেন, ম্যাগাজিন সম্পাদক লিংকন, রায়হান ইসলাম, নাজমুল হোসেন, বিধান রায়, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।