কিশোরগঞ্জে প্রায় দুই বছরে দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত 

এবার কিশোরগঞ্জেও দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস আজ শনিবার। ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশে আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবার কিশোরগঞ্জেও দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, প্রচারপত্র বিতরণসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

এদিকে কিশোরগঞ্জ-কটিয়াদী-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬০ কিলোমিটারজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যানবাহন। এতে গত প্রায় দুই বছরে এ সড়কে ৬৫টি দুর্ঘটনায় শিশু, নারীসহ অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৩৮ জন।

আঞ্চলিক এ মহাসড়কের ৬০ কিলোমিটারজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, সিএনজি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ যানবাহন। এতে মহাসড়কে চলমান দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে যেমন বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। কিছুদিন আগেও এ সড়কে যাত্রীবাহী ব্যাটারিচালিত এক অটোরিকশাকে দ্রুতগামী একটি বাসা চাপা দিলে এতে অটোরিকশার তিন আরোহী মারা যান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের কুলিয়ারচর ছয়সূতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এভাবেই প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

■ ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। 

■ ৬০ কিলোমিটারজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ যানবাহন।

কিশোরগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয় জানায়, গত বছর ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সড়কে ৩৮টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৩১ জন মারা যান। এ ছাড়া অন্তত ২০ জন আহত হন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৭টি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। এতে ২৫ জন মারা যান। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আরও অন্তত ১৮ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে গুরুতর আহত অবস্থায় পঙ্গু হয়ে জীবন যাপন করছেন। 

সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এর মধ্যে পুলেরঘাট বাজার, কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডসহ কয়েকটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের ভিড়ে প্রায় সময় যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক রাত পর্যন্তও সড়কে এসব নিষিদ্ধ যানবাহন দেখা যায়। ফলে অনেক সময় মহাসড়কে চলাচলকারী দ্রুতগামী বড় যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটে।

পাকুন্দিয়া পুলেরঘাট বাজারের বাসিন্দা পারভেজ আহমেদসহ পাঁচজন বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়কে নছিমন, করিমন, অটোরিকশা, ইজিবাইক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এসব নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ বা হাইওয়ে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা না থাকায় বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে। রাত অবধি এসব যানবাহন চলায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

কটিয়াদী হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই মামলা হচ্ছে। সড়কে যাতে ইজিবাইকসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ যানবাহন না চলে এ জন্য নিয়মিত মাইকিংও করা হচ্ছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই মহাসড়ক থেকে এসব যানবাহন সম্পূর্ণ উঠিয়ে নিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।