শ্রীনগর থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সেই যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

তরিকুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার রাতে উপজেলার পশ্চিম দেউলভোগ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজাদ রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

তরিকুল ইসলাম শ্রীনগর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি উপজেলার দেউলভোগ গ্রামের আবদুল মান্না ব্যাপারীর ছেলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আজ সন্ধ্যায় প্রাথমিক সদস্যপদসহ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

পরিদর্শক (তদন্ত) আজাদ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার আসামি তরিকুলকে থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর তরিকুলসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছিল। আজ রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, তরিকুল নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। পরে অভিযান চালিয়ে তরিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি শ্রীনগর থানাহাজতে আছেন।

পুলিশ ও থানা সূত্রে জানা যায়, মারামারির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর থানায় একটি মামলা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তরিকুল। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানাহাজতে রাখে। তখন তরিকুলকে ছাড়িয়ে নিতে প্রথমে থানায় আসেন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা তরিকুলকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন, কিন্তু পুলিশ রাজি হয়নি।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, রাতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। রাত ১০টার দিকে ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে জোর করে ওসি ও সার্কেল এসপির সামনে থেকে আসামি তরিকুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

থানাহাজত থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আজ বেলা দেড়টার দিকে থানায় একটি মামলা হয়েছে। যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রত্যাহার করে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। তিনি বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ওসির দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই তাঁকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন