ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে নতুন নির্বাচনের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থীর

ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবেছবি: প্রথম আলো

ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে কয়েকটি কেন্দ্রে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া। মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জামাল হোসেন মিয়া এ দাবি জানান।

জামাল হোসেন মিয়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এখানে দলীয় মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন জামাল হোসেন। বেসরকারি ফলাফলে ৮৭ হাজার ১৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর। ঈগল প্রতীকে জামাল হোসেন পেয়েছেন ৮৫ হাজার ২৩২ ভোট।

সংবাদ সম্মেলনে জামাল হোসেন মিয়া বলেন, ‘নির্বাচনে আমাকে জোর করে হারানো হয়েছে। আমার নির্বাচনী এলাকার মোট ১১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে গট্টি ইউনিয়ন, যদুনন্দী, রামনগর, কাইচাইল ইউনিয়নের ভোট জোর করে নৌকা প্রতীকে টেবিলের ওপরে নিয়ে নেয়। বাবুর কাইচাইল, বালিয়া গট্টি, জয় ঝাপ, বড় খারদিয়া, সুতার কান্দা, পোড়াদিয়া, কৃষ্ণারডাঙ্গী কেন্দ্রসহ আরও কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট নৌকা প্রতীকে জোর করে নিয়ে নেয়।’

প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জামাল হোসেন মিয়া বলেন, ‘অধিকাংশ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ২০০-৩০০ ব্যালটে নৌকায় সিল মেরে আগেই বাক্সে ভরে রেখে দিয়েছিলেন এবং আমার ঈগলের ভোটের ওপর নৌকা লিখে বান্ডিল করেছেন। আমার চোখের সামনে ভোট কেটে নিয়েছে। প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। অনবরত জাল ভোট দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে বারবার বললেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা (ম্যাজিস্ট্রেট) বলেন, “কেন্দ্রের ভেতরে কী হলো আমাদের দেখার বিষয় না।” প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ করতে হবে। আমি বললাম, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিজেই জড়িত। এরপরও পদক্ষেপ নেয়নি।’

জামাল হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমার ঈগলের অনেক ভোট নষ্ট দেখানো হয়েছে। আমি ভোটে জিতেছি। আমাকে জোর করে ১ হাজার ৯০০ ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে। প্রহসনের নির্বাচন, কারচুপির নির্বাচন ও ব্যালট ছিনতাইয়ের নির্বাচন নগরকান্দা-সালথাবাসী প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই ফলাফল আমরা মানি না।’ তিনি বলেন, নির্বাচনের এক দিন যেতে না যেতেই নগরকান্দা-সালথা তাঁর সমর্থকদের প্রায় ২০০ বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পাশাপাশি যেসব কেন্দ্রে অনিয়ম, ব্যালট ছিনতাই ও জাল ভোটের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ফল বাতিল করে আবার নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এ অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণায় কোনোরকম কারসাজি হয়নি। এ ফলাফলে জামাল হোসেন যদি সন্তুষ্ট না হন, তবে তিনি আইনের পথ বেছে নিতে পারেন। এ ব্যাপারে মামলা করারও সুযোগ আছে।