শিবচরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজনের ওপর হামলা
মাদারীপুরের শিবচরে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ তিনজনের ওপর হামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে শিবচর পৌরসভার কেরানীবাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অভিযোগ উঠেছে, শিবচর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য ইলিয়াস পাশা এবং তাঁর লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন। তবে ইলিয়াস পাশা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আহত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আতিকুর রহমান মাদবর। তিনি কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। বাকি দুজন হলেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লুৎফর রহমান এবং আতিকের সহযোগী সোহরাব হাওলাদার।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বিকেলে ব্যক্তিগত কাজ শেষে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলাপ করছিলেন কুতুবপুর ইউপির চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মাদবর। শিবচর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিবচর বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি বাচ্চু খলিফার বাড়ির সামনে এ আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনা শেষে আতিকুর মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে ওই বাসা থেকে বের হয়ে সড়কের ওপর দাঁড়ান।
এ সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর, ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান ও সোহরাব হাওলাদার আহত হন। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান হামলাকারী ব্যক্তিরা। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
কুতুবপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল আমিন মুনশি বলেন, ‘আজ সকালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে একটি সভায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইলিয়াস পাশার তর্কবিতর্ক হয়। এর জের ধরেই চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানকে একা পেয়ে পাশা ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়েছেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে মেম্বার লুৎফর রহমানসহ দুজনকে এ সময় মারধর করা হয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ইউপি চেয়ারম্যান আতিক মাদবরের ভাই রায়হান মাদবর মুঠোফোনে বলেন, তাঁর ভাইয়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর চেয়ে আপাতত কিছু বলার অবস্থা নেই।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ইলিয়াস পাশা মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত নই। সকালে যা হয়েছে, সেটা সকালেই শেষ। তবে এখন কারা কেন হামলা চালিয়েছে, তা আমার জানা নেই। তা ছাড়া আমি এ ধরনের লোক নই। রাজনৈতিক কারণে আমার নাম ব্যবহার করে কেউ ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই।’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার গোলদার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ তাঁর সহযোগীর ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, এমন অনেকের নাম তাঁরা পেয়েছেন। তবে কে, কেন এই হামলা চালানো হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ এ ঘটনা তদন্ত করছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।