ভৈরবে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ৪৫ জন আহত

ভৈরবে পাগলা কুকুরের কামড়ে দুই দিনে ৪৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩৩জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেন। সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কুকুরের কামড়ে দুই দিনে ১২ শিশুসহ অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনকে ঢাকার মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গল ও গতকাল সোমবার পৌর শহরের চণ্ডীবের, কালীপুর, রামশংকুর, গাছতলাঘাট ও ভৈরবপুর এলাকায় আহত ব্যক্তিরা কুকুরের কামড়ের শিকার হন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী একটি কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গতকাল বেলা দুইটার দিকে চণ্ডীবের উত্তর পাড়া এলাকায় দৌড়ে একটি কুকুর মূল সড়কে আসে। সড়কে কয়েকজনকে কামড়ায়। পরে বাড়িতে ঢুকে শিশু ও নারীদের কামড়ায়। চণ্ডীবেরবাসীর তাড়া খেয়ে কুকুরটি পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায় যায় এবং লোকজনকে কামড়ায়। আহতদের মধ্যে অন্তত ১২ জন শিশু রয়েছে। আজ সকালে রামশংকুর ও কালীপুর এলাকায় আবার কুকুরের কামড়ে পাঁচজন আহত হন। পরে এলাকাবাসীর তাড়া খেয়ে কুকুরটি স্থান পরিবর্তন করে। দুদিনে আহতদের মধ্যে ৩৩ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যরা চিকিৎসা নিয়েছেন বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক থেকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিরা হলেন সাহারা বেগম (৫০), আসমা বেগম (৪৮), রহমান মিয়া (১১), জান্নাত বেগম (৫), দ্বীপ মিয়া (১১), ফরিয়া বেগম (৭), আ. রহমান (৬০), মোনতাহা বেগম (২৭), নারায়ণ চন্দ্র (৪৫), আদিল উদ্দিন (৩), মোছা. আসমা (৩৫), মৌসুমী বেগম (৯), ইয়ামিন বেগম (১২), ঈশান মিয়া (১৪), মো. হুসাইন (৬), মাজেদা বেগম (৪২), ফারিহা ইসলাম (৭), মোছা. তানজিনা (১০), রাফিয়া বেগম (২৭), রাতুল মিয়া (২০), মারুফা বেগম (১৭), রাজন মিয়া (১৭), ইতি বেগম (২৫), আলেয়া আক্তার (৪ ), আ. গাফ্ফার (৪), রাই মিয়া (১২), সুইটি বেগম (১৬), সখিনা বেগম (৩০), রাবিয়া আক্তার (১৩), ফরিদা বেগম (৫৫), বাচ্চু মিয়া (৫০), আয়েশা বেগম (৩৫) ও রিয়াদ (১০)। এদের মধ্যে আসমা বেগম ও জান্নাত বেগমকে ঢাকার মহাখালীর সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় কথা হয় আসমা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কুকুর এসে কামড়ানো শুরু করে। আমার চিৎকারে লোকজন আসেন। ওই লোকদেরও কামড়াতে থাকে কুকুর।’ আবদুর রহমান নামের আরেক আহত ব্যক্তি বলেন, ‘কুকুরটি কামড় দিয়ে আমাকে টেনে সামনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। চেষ্টা করেও নিজেকে মুক্ত করতে পারছিলাম না।’

গতকাল বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের কর্মীরা আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। খারযুক্ত সাবানপানি দিয়ে ক্ষতস্থান ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে দেওয়া হচ্ছিল ভ্যাকসিন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উম্মে হাবিবা বলেন, প্রত্যেককে একাধিক স্থানে কুকুর কামড়িয়েছে। কামড়ের ক্ষতগুলো বেশ গভীর। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।