ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জে ৬ কিলোমিটার যানজট

সড়ক দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরেছবি: দিনার মাহমুদ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে আজ রোববার সকালে প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখী মানুষ। তবে ভোগান্তি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ ছাড়ছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রীরা।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, আজ সকাল আটটার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার যাত্রামুড়া এলাকায় মালবাহী ট্রাক ও প্রাইভেট কারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় পাশে কাঁচপুর থেকে রূপসী পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল ৯টার দিকে হাইওয়ে পুলিশ গাড়ি দুটি সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়। তবে সকাল ১০টা পর্যন্ত এই সড়কে যানজট দেখা গেছে। যানজট নিরসনে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় প্রাইভেট কারের দুই যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়।

এদিকে ঈদ ঘনিয়ে এলেও আজ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে যাত্রীর চাপ ছিল অন্য বছরের তুলনায় কম। মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রী ও পরিবহন দুটোই ছিল বেশি। সকালের তুলনায় ভোরে যাত্রীসমাগম বেশি ছিল।

সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে কথা হয় একুশে পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা আরিয়ান মাহমুদের সঙ্গে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় যাত্রী ডাকাডাকি করছিলেন তিনি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর এ সময় আমরা কাউন্টারে বসে থাকি। যাত্রীদের টিকিট দিতে পারি না। এ বছর এখনো তেমন চাপ তৈরি হয়নি। ভোরে সিলেট পথের কিছু যাত্রী ছিলেন।’ বিভিন্ন কারখানা ছুটি হলে সন্ধ্যার পর কিংবা আগামীকাল সোমবার সকালে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

সকালে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একুশে পরিবহনের এসি ও নন-এসি বাসে টিকিটপ্রতি ৫০ টাকা করে বেশি ভাড়া নিতে দেখা গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতোই ৩০০ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কে চলাচলকারী সোহাগ পরিবহন।

এই পরিবহনের সাইনবোর্ড এলাকার কাউন্টারে কথা হয় ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার বেসরকারি চাকরিজীবী জাকির হোসেনের সঙ্গে। কেরানীগঞ্জের একটি মাদ্রাসার আটজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, কোনো ভোগান্তি ছাড়াই এ বছর বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। সোহাগ পরিবহনের বাসে স্বাভাবিক সময়ের মতোই ৩০০ টাকা করে টিকিট কেটেছেন তাঁরা।

ওই কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মেহেদী হাসান ওরফে নিশান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রীর যত চাপই থাকুক, আমরা কখনো টিকিটের দাম বাড়াই না। ভোরে যাত্রীর চাপ ছিল। তবে টিকিট-সংকট তৈরি হওয়ার মতো নয়। সকাল হওয়ার পর একেবারেই যাত্রী নেই। তবে টিকিটের মূল্য আগের দামে রাখায় আমাদের যাত্রী পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

সকাল সাড়ে ৯টায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই টিকিট বিক্রেতাদের যাত্রীর জন্য হাঁকডাক দিতে দেখা গেছে। যাত্রীরাও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন। পুরো সময় মহাসড়ক দুটোর বিভিন্ন অংশে পুলিশ ও যানজট নিরসন কর্মীদের সক্রিয়তা দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরছে। ছোট্ট একটি দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-সিলেট পথে সামান্য যানজট তৈরি হয়েছে।’