সিলেটে দুই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, নগরে জলাবদ্ধতা

টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সুরমাসহ সিলেটের নদ-নদীর পানি। ছবিটি আজ রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কালিঘাট-কিনব্রিজ অংশ থেকে তোলাছবি: আনিস মাহমুদ

সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সিলেটের দুটি নদীর দুই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। নগরের ভেতরে অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি জমেছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৪৬ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৭১ মিটার ওপরে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে ১৬ দশমিক ১৩ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৭৩ মিটার ওপরে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার লোভা, সারি-গোয়াইন ও ধলাইসহ সব কটি নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সারি ও ডাউকি নদীর পানি গতকালের চেয়ে আজ সামান্য কমেছে।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় গতকাল শনিবারের মতো আজ রোববারও সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। নগরের উপশহর, চৌকিদেখি, মেজরটিলা, মিরাবাজার, যতরপুর, সাগরদিঘিরপারসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি ঢুকেছে। তবে সকাল ১০টা নাগাদ বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় বিভিন্ন এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে।

ভারী বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার আশঙ্কা থাকায় আগেভাগেই আসবাবপত্র নিয়ে শহরের বাসা ছাড়ছে একটি পরিবার। নগরের কিনব্রিজ এলাকায় আজ সকাল ১০টার দিকে
ছবি: আনিস মাহমুদ

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদ-নদীর পানি বাড়ায় জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে আজ রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৪০৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টির হিসাবে চলতি বছর এটাই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার ১৩টি উপজেলায় ৫৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।