বিএসএফের আপত্তিতে বেনাপোল স্থলবন্দরের ট্রাক টার্মিনালের নির্মাণকাজ বন্ধ

বিএসএফের আপত্তিতে বেনাপোল স্থলবন্দরের ট্রাক টার্মিনালের একাংশের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মাণাধীন কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের একটি অংশের নির্মাণকাজ ১৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা থেকে ১৩৭ মিটারের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে বিএসএফ আপত্তি জানিয়েছে।

স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনায় অবস্থিত পেট্রাপোল স্থলবন্দর আধুনিকায়নে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা (নো ম্যানস ল্যান্ড) থেকে ১০ মিটার জায়গা ছেড়ে ১৫০ গজের মধ্যে ৪২ একর জমিতে চেকপোস্ট  নির্মাণকাজ শেষ করে ভারত। আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা থেকে ১০ মিটার জায়গা ছেড়ে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে স্থলবন্দর সম্প্রসারণে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৩২৯ কোটি ২৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমিতে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু করে। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম ধাপে ২৫ একর জমিতে মাটি ও বালু ভরাট এবং স্থাপনা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬ একর জমিতে মাটি ও বালু ভরাট এবং সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা থেকে ১০ মিটার জায়গা ছেড়ে ১ হাজার ৫২৫ দশমিক ৬৬ ফুট সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ এবং মাটি ও বালু ভরাটের কাজ চলছিল। এই অবস্থায় ২৫ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা থেকে ১৩৭ মিটারের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে আপত্তি জানায় বিএসএফ। এরপর আন্তর্জাতিক শূন্যরেখা থেকে ১৩৭ মিটার জায়গা ছেড়ে দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা টানিয়ে দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)।  

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে আন্তর্জাতিক শুন্যরেখার পাশে নির্মাণাধীন সীমানাপ্রাচীর। গত মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

গত মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ একর জমিতে নির্মাণাধীন কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের মাটি ভরাট এবং স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাশের ১৬ একর জমিতে উঁচু করে মাটি ও বালু ভরাট করা হচ্ছে। লাল পতাকা বাঁধা লাঠি পুঁতে রাখা জায়গার বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করা রাখা আছে বালু। পাশে মাটি ও বালু সমান করা যন্ত্র পড়ে আছে। ওই অংশে কোনো কাজ হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক শূন্যরেখার পাশ ঘেঁষে সীমানাপ্রাচীরের নির্মাণকাজও বন্ধ রয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, চলতি বছরের জুনে ৪১ একর জমির ওপর কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ একর জমি ভরাট এবং স্থাপনা নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। অবশিষ্ট ১৬ একর জমির ভরাট এবং নির্মাণকাজ চলছে। কাজটি শেষ হলে ভারত থেকে প্রতিদিন যেসব ট্রাক স্থলবন্দরে আসবে, সেগুলো ওই টার্মিনালে পার্কিং করতে পারবে। এতে স্থলবন্দরে যানজট থাকবে না। কার্গো ট্রাক থেকে পণ্য খালাসের কাজ সহজ হবে।

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘১৬ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন টার্মিনালের একটি অংশের মাটি ভরাট এবং সীমানাপ্রাচীরের কাজ বিএসএফের আপত্তিতে আপাতত বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তা ছাড়া বিষয়টি আমরা বিজিবি কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে আইনানুগভাবে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করার জন্য আমরা ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি।’