সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডেছবি: প্রথম আলো

পোষ্য কোটা ইস্যুতে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তাঁরা এ দাবি জানান। সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম বর্জন করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালন করা হচ্ছে।

মানববন্ধনে শিক্ষক-কর্মকর্তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। তিনটি দাবি হলো—শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে; যাঁদের ছাত্রত্ব শেষ, তাঁদের সনদ বাতিল করতে হবে এবং যাঁরা রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী, তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যত দিন পর্যন্ত শাস্তি দৃশ্যমান না হবে, তত দিন আন্দোলন চলবে।

ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আম্মার ও তাঁর সহযোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার নীলনকশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। শনিবার শিক্ষকদের যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, আমরা যদি এর সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদেরও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘গত নয় মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রহসনের অনেক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যার একটিও আলোর মুখ দেখেনি। তাই আমরা আর ওই সিদ্ধান্তে ক্ষান্ত হচ্ছি না। শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখেই আমরা ক্ষান্ত হব।’

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক দিল-আরা হোসেন বলেন, ‘আমার সহকর্মী অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন একজন সহনশীল মানুষ। তাঁর ওপর হামলাটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। আমি তাঁর বিভাগের সভাপতি হিসেবে এসব ছাত্র নামের সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

এদিকে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে আজ সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ।

এর আগে গতকাল পোষ্য কোটা নিয়ে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। পাশাপাশি শনিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৫ সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।