খুলনায় শিশুকে যৌন নিপীড়নের পর হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

খুলনার কয়রায় নিখোঁজের ৯ ঘণ্টা পর মৎস্যঘেরের পাড় থেকে এক শিশুর (৬) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই কিশোর গতকাল রোববার আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

জবানবন্দি অনুযায়ী, যৌন নিপীড়নের পর ছেলেশিশুটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ওই কিশোর। পরে রাতের অন্ধকারে মরদেহ মৎস্যঘেরের পাড়ে ফেলে দেয়। কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজাহারুল ইসলাম এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান আজ সোমবার সকাল ১০টায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কিশোরের বাড়ি উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। নিহত শিশুটির বাড়িও একই ইউনিয়নে। পাশের গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে এসে সে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গ্রামের মৎস্যঘেরের পাড় থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেন এলাকাবাসী।

গ্রেপ্তার কিশোরের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২৬ জানুয়ারি বিকেলে ওই শিশুকে মুঠোফোনে ভিডিও দেখানোর কথা বলে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় ওই কিশোর। বাড়িতে তখন কেউ না থাকায় দরজা আটকে শিশুর ওপর যৌন নিপীড়ন চালায়। একপর্যায়ে শিশুটি তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার কথা বলে। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কিশোর শিশুটির ঘাড়ে আঘাত করে। এ সময় শিশুটি অচেতন হয়ে পড়লে মারা গেছে ভেবে ওই কিশোর তাকে খাটের নিচে রেখে ঘরের দরজা লাগিয়ে বাইরে চলে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর জানিয়েছে, বাইরে থেকে ফিরে এসে খাটের নিচে শিশুটির হাত নড়াচড়া করতে দেখে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে রাত ৮টার দিকে শিশুর মরদেহ নিয়ে চুপিসারে পার্শ্ববর্তী মৎস্যঘেরের পাড়ে ফেলে রেখে আসে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিহত শিশুর গলায় দড়ি প্যাঁচানোর লালচে দাগ ও কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যাচ্ছিল এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনাস্থলে সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার সময় পাশের এক কিশোরের আচরণ অস্বাভাবিক মনে হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর নিজের দোষ স্বীকার করে।

ওসি বলেন, এ ব্যাপারে নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কয়রা থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।