রাজশাহীর সড়ক বিভাজকের পৌনে ২০০ ফুলগাছ কাটা নিয়ে যা বললেন গ্রেপ্তার তরুণ
রাজশাহীর নগরের ফুলগাছ কাটার অভিযোগে গতকাল বুধবার রাতে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নগরের সায়েরগাছা এলাকার নাঈম ইসলাম (২৫) নামের এই তরুণ পুলিশের কাছে ফুলগাছ কাটার কথা স্বীকার করেছেন।
রাজশাহী নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার নাঈম পুলিশের কাছে বলেছেন, প্রজাপতি সড়কে একটি দুর্ঘটনার কারণে ক্ষোভে তারা তিন থেকে চার বন্ধু মিলে গাছগুলো কেটেছেন। ফুলগাছের কারণে রাস্তার এপার–ওপার দেখা যায় না।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ উল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগ ঠিক নয়। শহরের অন্য সড়কে আরও বেশি গাছ আছে। যে সড়কে গাছ নেই, সেখানেও দুর্ঘটনা ঘটে। আসলে সচেতনভাবে সড়ক পার হলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। একটু ধৈর্য ধরে দেখতে হয় বিপরীত দিক থেকে কোনো গাড়ি আসছে কি না।
ফুলগাছের সঙ্গে দুর্ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে সৈয়দ মাহমুদ উল ইসলাম বলেন, ওই এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে। এ জন্য যানবাহন এক লেনে চলছে। নির্মাণকাজের জন্য এইটুকু তো মেনে নিতেই হবে।
রাজশাহী নগরের বহরমপুর রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা সড়কের সায়েরগাছা মোড় পর্যন্ত সড়কটি ‘প্রজাপতি সড়ক’ বলে পরিচিত পেয়েছে। এই সড়কের ফুলগাছগুলোর সৌন্দর্য রাজশাহীসহ সারা দেশের মানুষের নজর কেড়েছে। ফুটে থাকা করবী, মুসান্ডা, বড় রঙ্গন ও মিনি রঙ্গন ফুলগাছের ভিডিও প্রায়ই ফেসবুকে দেখা যায়।
এই সড়কের ১২৫টি গাছ গতকাল সকালের দিকে দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলে। তারা আরও ৫০টি গাছ তুলেও নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় গতকাল নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়। সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অভিযুক্ত নাঈম ইসলামকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মনিরুজ্জামান।
শহরের ফুলগাছ কাটার সংবাদ প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে রাতেই প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে এই প্রতিবেদন দেখে অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পাখিপ্রেমী হাসনাত রনী লিখেছেন, ‘বিকৃত মানসিকতার অমানুষ। প্রকাশ্যে বিচার করা দরকার।’ বাসুদেব কুমার লিখেছেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। পৃথিবীর ভয়ংকর প্রাণী হচ্ছে মানুষ। এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই।’ মুকুল পানকড়ি নামের একজন লিখেছেন, ‘এখন ফুল ফোটার সময়, এ সময় এমন কাজ কোনো মানুষ করতে পারে? ছি!’