আইনের সংস্কার না করা হলে মামলার জট থেকে রেহাই পাব না : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে নেত্রকোনায় নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে শহরের সাতপাই এলাকায় আধুনিক স্টেডিয়ামে
ছবি: প্রথম আলো

নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে নেত্রকোনায় নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে শহরের সাতপাই এলাকায় নেত্রকোনা আধুনিক স্টেডিয়ামে নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের সংস্কার যদি না করা হয়, তাহলে মামলার জট থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।

বিকেল চারটার দিকে দুর্গাপুরের বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমিসহ স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা নেচে–গেয়ে প্রধান বিচারপতিকে অভ্যর্থনা জানান। পরে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উত্তরীয় প্রদান ও মানপত্র পাঠের পর তাঁকে সম্মাননা স্মারক দেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম খান।

এর আগে গতকাল শনিবার জন্মস্থান মোহনগঞ্জ উপজেলাতে প্রধান বিচারপতিকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ওবায়দুল হাসানের এটাই প্রথম নেত্রকোনা সফর।

আজকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, যুগোপযোগী আইন তৈরি করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আইনের অনেক ডালপালার জন্য একটি মামলার জন্য বিচারপ্রার্থীদের বিভিন্ন আদালতে যেতে হয়। জজ কোর্ট থেকে হাইকোর্ট, হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে। আবার আপিল হয়, আবার রিভিউ হয়। এ জন্য মামলার জট শুরু হয়। এর সঙ্গে আইনজীবী, বিচারক—প্রায় সবাই জড়িত। এ দেশে আইনের কিছু ত্রুটি অবশ্যই রয়েছে। এই ত্রুটিগুলো সরিয়ে যুগোপযোগী আইন করার জন্য সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। সিভিল প্রসিডিউর দেশে সংস্কার করা হয় বহু বছর পর পর। সিভিল প্রসিডিউরসহ অন্যান্য আইনের সংস্কার না করা হলে মামলার জট ছুটবে না। আইন কমিশন থেকে যেসব পরামর্শ দেওয়া হয়, তা বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন

প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থী ও তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে তৈরি হতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। পরিবার হলো পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। তাই সন্তানদের বৈষম্যহীন ও ধর্মের ভেদাভেদহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ চর্চায় অভ্যস্ত হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। তারপর গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। তাই তিনি শিক্ষকদের বলবেন, তাঁরা যেন শিক্ষকতাকে চাকরি হিসেবে গণ্য না করেন।

আরও পড়ুন

পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান, সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান ও জাকিয়া পারভীন, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব এ কে এম ফজলুল হক, জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহজাহান কবির, জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইফতেকার বিন আজিজ, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম কবীর, জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহম্মেদ প্রমুখ।