স্থলবন্দর ঘোষণার অপেক্ষায় কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া

১৭টি পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমোদন রয়েছে। পণ্যের তালিকা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে।

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে। সাম্প্রতিক ছবিপ্রথম আলো

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া শুল্ক স্থলবন্দর দুটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হওয়ার ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে। এক মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম চলছে। এ দুটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তরিত হলে ভারতের মেঘালয়ের সঙ্গে এ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গোবরাকুড়া ও এর এক কিলোমিটার পশ্চিমে কড়ইতলী স্থলবন্দর অবস্থিত। এর সঙ্গে সংযুক্ত আছে মেঘালয় রাজ্যের তোড়া এলাকার গান্ধীগাঁও ও গাছুয়াপাড়া শুল্ক স্টেশন।

দুটি বন্দরের ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে কড়ইতলী ও ১৯৯৭ সালে গোবরাকুড়া শুল্ক স্টেশনের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি শুরু হয়। কড়ইতলী ব্যবসায়ীদের নিয়ে কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও গোবরাকুড়া বন্দর কেন্দ্র করে কড়ইতলী-গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ নামের দুটি সংগঠন হয়। এই সংগঠনের অধীনে আছেন ৮০০ ব্যবসায়ী। ২০১২ সালে সরকার শুল্ক স্থলবন্দরটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৬৭ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ দুই বন্দর নির্মাণে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, দুই স্থলবন্দরের জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ৫ হাজার ৯৮৭ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ওয়্যারহাউস, অফিস ভবন, ডরমিটরি, ব্যারাক ভবন ও পাওয়ার হাউস নির্মাণকাজও শেষ করা হয়েছে। ১ হাজার ৭৪০ মিটার নালা নির্মাণ, ১০ হাজার বর্গমিটার পার্কিং ইয়ার্ড ও শৌচাগার কমপ্লেক্সও তৈরি করা হয়েছে। দুটি স্থলবন্দরে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার আছে। এ ছাড়া গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী বন্দরে ১০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন দুটি করে চারটি ওয়েব্রিজ স্কেল স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। দুই বন্দরেই বিদ্যুতায়ন ও সাজসজ্জার কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়া জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারতের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দর দুটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে কেবল কয়লা নয়, ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্যও আসবে বাংলাদেশে। অন্যদিকে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য এবং ভুটান ও নেপালে পণ্য পাঠাতে পারবেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা।

কড়ইতলী-গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের মহাসচিব অশোক সরকার বলেন, দুটি বন্দরে ১৭টি পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমোদন রয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের তালিকা বাড়ানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আবেদন করা হবে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (কড়ইতলী-গোবরাকুড়া বন্দরের দায়িত্বে থাকা) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বছর জুনে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে।