কক্সবাজার জেলার মানচিত্র

কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার গহিন পাহাড়ে আজ বুধবার র‍্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ অভিযানে অপহরণ চক্রের আস্তানা থেকে তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। রাত আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে অভিযান চলছিল বলে জানা গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম রাত সাড়ে আটটায় প্রথম আলোকে বলেন, টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার গহিন পাহাড়ে অপহরণ চক্রের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্ধগলিত তিন ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। সন্দেহ করা হচ্ছে, উদ্ধার মরদেহগুলো গত ২৮ এপ্রিল টেকনাফের বাহারছড়া এলাকা থেকে নিখোঁজ তিন যুবকের। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে।

অংশ নেওয়া পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, উদ্ধার মরদেহগুলো বাহারছড়া থেকে নিখোঁজ তিন ব্যক্তির হতে পারে। তাঁরা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের সওদাগরপাড়ার মোহাম্মদ ইউছুপ, চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের জমির হোসেন ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটা এলাকার মো. ইমরান। তাঁরা তিনজন পরস্পরের বন্ধু। তবে লাশ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৮ এপ্রিল নিখোঁজ তিন বন্ধু পাত্রী দেখতে কক্সবাজার থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালী পাড়াতে যান। তখন বিকেল পৌনে চারটা। এ সময় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অটোরিকশা থামিয়ে তিন বন্ধুকে অপহরণ করে পাহাড়ের গহিন জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ছেড়ে দিতে পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায় করতে তিনজনকে নির্যাতনের ধারণকৃত ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এরপর পরিবারের লোকজন তিনজনকে অপহরণের কথা র‌্যাব ও পুলিশকে জানিয়েছিলেন।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত দুজনকে আটক করেছে র‍্যাব। পরে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ বিকেলে পাহাড়ি আস্তানায় যৌথ অভিযান চালায় র‍্যাব ও পুলিশ।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, ঘটনাস্থলে তিনটি লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। লাশগুলো বিকৃত হয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তিনজনের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের তথ্যমতে, গত আট মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ৬৫ জনকে অপহরণ করা হয়েছে মুক্তিপণের জন্য। রোহিঙ্গাদের চারটি সন্ত্রাসী বাহিনী এই অপহরণ–বাণিজ্যে জড়িত বলে স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ।