বিএনপি নেতার বাড়িতে সম্মেলন, মুন্সিগঞ্জের ২ উপজেলায় কমিটি, সাবেক নেতাদের ক্ষোভ
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ মো. আবদুল্লাহর বাড়ির মাঠে সম্মেলন করে দুই উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে সম্মেলনে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতকে বঞ্চিত করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দুই উপজেলার সাবেক নেতারা।
নতুন কমিটিতে শ্রীনগর উপজেলায় শহীদুল ইসলামকে সভাপতি ও হাফিজুল ইসলাম খানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। সিরাজদিখান উপজেলায় শেখ মো. আবদুল্লাহকে সভাপতি ও এম হায়দার আলীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে হজরতপুর গ্রামে শেখ আবদুল্লাহর বাড়ির মাঠে সম্মেলন শুরু হয়। সকাল থেকে দুই উপজেলার নেতা-কর্মীরা সম্মেলনস্থলে জড়ো হন। দুপুরে প্রথম অধিবেশনে আগত অতিথিরা বক্তব্য দেন। বিকেলে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের সর্বসম্মতিতে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম। এ সময় কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলী আজগর রিপন মল্লিক, লৌহজং বিএনপির আহ্বায়ক শাজাহান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে দাওয়াত না পেয়ে শ্রীনগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। শ্রীনগর উপজেলা তৃণমূল নির্যাতিত নেতা-কর্মীর ব্যানারে মিছিল হয়। মিছিলটি শ্রীনগর বাজার থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। আজ সকালে জানতে পারলাম, শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে সিরাজদিখান উপজেলায়। এটা বিএনপিকে ধ্বংস করার আলামত।’ তিনি বলেন, বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ২৫ জনের মতো কাউকে না জানিয়ে সম্মেলন করা হলো। তিনি এ পকেট কমিটির তীব্র নিন্দা জানান।
শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মমিন আলী বলেন, ‘একটা উপজেলার সম্মেলন আরেক উপজেলায় কীভাবে হয়। যাঁরা কমিটিতে আছেন, তাঁদের কাউকে দাওয়াত পর্যন্ত দিল না। একজনের বাড়িতে সম্মেলন, এটা বিএনপিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা। আমি বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে। আমরা দুটি উপজেলার সম্মেলন আলাদাভাবে করতে চেয়েছিলাম। শ্রীনগরে পুলিশ আমাদের অনুমতি দেয়নি। এ জন্য সিরাজদিখানে দুটি সম্মেলন একসঙ্গে করতে হয়েছে। যারা কমিটিতে স্থান না পায়, তারা বিভিন্ন ধরনের রটনা রটায়।’
আবদুস সালাম বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রথম অধিবেশন হয়। দুপুরের পর আবার দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করার জন্য ভোটের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। একের অধিক প্রার্থী না থাকায় ভোট হয়নি। সর্বসম্মতিক্রমে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।