ফরিদপুরে প্রতিবেশীকে পিটিয়ে হত্যার ১৪ বছর পর চারজনের যাবজ্জীবন

রায় ঘোষণার পর দণ্ড পাওয়া আসামিদের কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। রোববার দুপুরে ফরিদপুর আদালতে
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরে প্রতিবেশীকে পিটিয়ে হত্যার ১৪ বছর পর চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ আদেশ দেন।

মামলায় মো. ইলিয়াস শেখ (৩৭) নামের আরেক ব্যক্তিকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কোন্দারদিয়া গ্রামের এমদাদুল শেখ (৪৪), মিরাজ শেখ (৩২), এরশাদ শিকদার (৩৪) ও জব্বার শিকদার (৪৯)। রায় ঘোষণার সময় দণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের পুলিশ প্রহরায় কারাগারে পাঠানো হয়।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওয়াব আলী প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ধারাসহ ৩৪ ধারায় চারজনকে জরিমানাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই আইনের ৩২৪ ধারায় একজনকে জরিমানাসহ ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে নাম থাকা বাকি তিনজনের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ না থাকায় তাঁদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কোন্দারদিয়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের প্রতিবেশী আলী শেখের বাড়ির পাশে কেউ মলত্যাগ করেন। এ ঘটনায় আবদুল কুদ্দুসের ভাতিজা সুজন শেখকে (৪৪) সন্দেহ করে গালিগালাজ করেন আলী শেখ। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির একপর্যায়ে আলী শেখের পক্ষের একজনের লাঠির আঘাতে আবদুল কুদ্দুস গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে ঢাকায় পাঠান। ফরিদপুর থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ওই দিন কুদ্দুসের ছেলে জাকির হোসেন বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ১৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় দেন আদালত।