শরীয়তপুরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৮

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। শনিবার সকালে বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ রোববার সকালে জাজিরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় কুমার দাস বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেছেন।

মামলায় আসামি হিসেবে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৮০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিলাসপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে র‍্যাবের একটি দল বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

গতকাল শনিবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুল জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই পক্ষ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই ঘটনায় ১৫ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ককটেলের আঘাতে মারুফ (২৫) নামের এক তরুণের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসান মুন্সি (৫০) নামের এক ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিলাসপুর ইউপির চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল মাদবরের মধ্যে এলাকার আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ কারণে গত দুই বছরে ওই এলাকায় অন্তত ১০ বার সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে দূর্বাডাঙ্গা এলাকায় কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন

সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায় একটি খোলা মাঠে দুই পক্ষের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। সেখানে অনেকের হাতে বালতি এবং হেলমেট পরিহিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। বালতি থেকে ককটেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। পরে সেগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করছে।

ওই ঘটনার পর বিলাসপুরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল রাতে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাতজনকে আটক করা হয়। আজ সকালে জাজিরা থানার এসআই সঞ্জয় কুমার দাস বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় দুই পক্ষের সমর্থকদের আসামি করা হয়। আটক সাতজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাবের একটি দল ঢাকা থেকে বিলাসপুর ইউপির চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, বিলাসপুরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি মামলা করেছে পুলিশ। বিস্ফোরক আইনে করা ওই মামলায় দুই পক্ষের ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এই মামলার আসামি কুদ্দুস ব্যাপারীকে র‍্যাব আটক করেছে। তাঁকে এখনো পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। ওই মামলার এজারভুক্ত সাত আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।