সীতাকুণ্ডে বাসে আবারও মাদক খুঁজে পেল সেই ‘রানি’

শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে উদ্ধার করা মাদকের সামনে বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষিত কুকুর রানি। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আজ সকাল নয়টার দিকে
প্রথম আলো

প্রশিক্ষিত কুকুর রানির সহায়তায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে আবারও মাদকের চালান জব্দ করল বিজিবি। এবার উদ্ধার করা মাদক আইসসদৃশ (ক্রিস্টাল মেথ) হলেও তা আইস কি না, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে গত ৩১ আগস্ট রানির দেখিয়ে দেওয়া ব্যাগ থেকে এক কেজি ওজনের হেরোইন উদ্ধার করেছিল বিজিবি।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পাবনা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে অভিযান চালান বিজিবি সদস্যরা। প্রতিবারের মতো প্রশিক্ষিত কুকুর রানিকে প্রথমে বাসে তোলা হয়।

এরপর মাদকভর্তি একটি ব্যাগ চিহ্নিত করা হয়। সেখানেই মেলে আইসসদৃশ মাদকের। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, উদ্ধার করা মাদক আইস কি না, তা ল্যাব টেস্টের পর বোঝা যাবে। আইস হলে এই মাদকের দাম পাঁচ কোটি টাকা। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

অভিযানের উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিজিবি ৮–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রামেশ্বর দাস, সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আলাউদ্দিন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এস এম আলম খান ও ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সামিউর রহমান।

সরেজমিন দেখা যায়, শ্যামলী পরিবহনের ভেতর থেকে উদ্ধার করা মাদকের একটি করে নমুনা উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পরীক্ষার জন্য নিয়েছে। একটি নমুনা তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে দেখেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বাকি মাদকদ্রব্যগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়।

বিজিবি ৮–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাবনা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসটিতে তাঁরা অভিযান চালান। প্রাথমিকভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন উদ্ধার করা মাদককে ক্রিস্টাল মেথ বলে চিহ্নিত করেছেন। তবে পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ক্রিস্টাল মেথ নিশ্চিত হলে এক কেজি মাদকদ্রব্যের দাম পড়বে পাঁচ কোটি টাকা।

সীতাকুণ্ডে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযানে মাদক উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে গত ৩১ আগস্ট ভাটিয়ারী বাজার থেকে ১ কেজি ১০০ গ্রাম হেরোইন, ৯ জুলাই ভাটিয়ারী উত্তর বাজার থেকে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম বাদামি রঙের হেরোইন, ৯ জুন সোনাইছড়ি ইউনিয়নের তেঁতুলতলা এলাকা থেকে ২ কেজি হেরোইন এবং ৩ জুন ভাটিয়ারী বাজার এলাকা থেকে ১ কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রামেশ্বর দাস প্রথম আলোকে বলেন, সীতাকুণ্ড থেকে চার দফা হেরোইনের চালান ধরেছিল বিজিবি। এর মধ্যে শেষের দুটি চালানে পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর হেরোইন চিহ্নিত হয়নি। এবারের বিষয়টিও পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে সীতাকুণ্ড থানা একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।