খুলনায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনায় হত্যা মামলায় জসিম নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এই রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান। ঘটনার দীর্ঘ ১৩ বছর পর ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন কাজী সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামি জসিম পলাতক। পুলিশ ও আদালতের কাছে জসিমের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার করতে না পারাটা রহস্যজনক।
সালিসের পর বাসা ছেড়ে দিতে বললে একটি ছুরি নিয়ে পেছন দিক থেকে জাহাঙ্গীরের ঘাড়ের বাম পাশে ঢুকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান জসিম।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের দিকে জাহাঙ্গীর হোসেনের (নিহত) বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন জসিম। তিনি রিকশা চালাতেন। জাহাঙ্গীরের বাড়ির সঙ্গে থাকা দোকান ভাড়া নিয়ে চালাতেন রবিউল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি। ওই বছরের মে মাসের শুরুর দিকে দোকান থেকে রবিউলের একটি মুঠোফোন হারিয়ে যায়। ঘটনার চার-পাঁচ দিন আগে জসিম মুঠোফোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে রবিউলের কাছ থেকে ৮০০ টাকা নেন। পরবর্তী সময়ে মুঠোফোন ও টাকা কোনোটিই ফেরত না দেওয়ায় স্থানীয় কয়েকজনের কাছে নালিশ করেন রবিউল। ১৯ মে সকালে জসিম ও রবিউলকে নিয়ে সালিস বসান স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। সালিসে জসিমই মুঠোফোন চুরি করেছেন বলে বেরিয়ে আসে। সালিসকারীরা জসিমকে মুঠোফোন ও ৮০০ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সালিসে জাহাঙ্গীরও ছিলেন।
সালিসের পর জসিমকে ওই মাসের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন জাহাঙ্গীর। ওই দিন বিকেলে বাড়ির সামনে রবিউলের বন্ধ থাকা দোকানের বেঞ্চে বসে ছিলেন জাহাঙ্গীর। এ সময় একটি ছুরি নিয়ে পেছন দিক থেকে জাহাঙ্গীরের ঘাড়ের বাম পাশে ঢুকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান জসিম। পরে স্থানীয় লোকজন জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রাতেই জাহাঙ্গীরের বড় ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে জসিমকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর তৎকালীন সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জি এম নজরুল ইসলাম জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেছেন।