কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যবসায়ীকে ফেরত দিলেন ইজিবাইকচালক

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা-পুলিশের মধ্যস্থতায় প্রকৃত মালিককে টাকার থলে ফেরত দেন ইজিবাইকের চালক শেখ ইসমাইল আলী। গতকাল রাতে যশোর কোতোয়ালি থানায়ছবি: সংগৃহীত

যশোর শহরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহ এলাকায় সড়কে একটি প্লাস্টিকের থলে পান ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালক শেখ ইসমাইল আলী (৫৮)। খুলে দেখেন থলেতে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা। তখন তাঁর ইজিবাইকে এক যাত্রী ছিলেন। ইসমাইল ওই যাত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়িতে যান। পরে ওই যাত্রীর মাধ্যমে টাকা খোয়ানো ব্যক্তির খোঁজ পেয়ে তাঁকে টাকা ফেরত দেন ইজিবাইকচালক।

ইজিবাইকচালক ইসমাইল আলীর বাড়ি সদর উপজেলার রামনগর গ্রামে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান ও যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় টাকার প্রকৃত মালিক ফল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামকে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ইসমাইলের ইজিবাইকে থাকা ওই যাত্রীর নাম জানা যায়নি। তিনি কুষ্টিয়ায় কাপড়ের ব্যবসা করেন। ব্যবসায়িক কাজে তিনি যশোরে এসেছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহ এলাকার পাইকারি ফল মার্কেটের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গতকাল বিকেলে বকচর এলাকার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলের হুকের সঙ্গে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকাসহ প্লাস্টিকের একটি থলে ঝোলানো ছিল। ভিড়ের মধ্যে ব্যাগটি মোটরসাইকেল থেকে ছিঁড়ে পড়ে যায়। ইজিবাইকচালক ইসমাইল আলী ওই থলে পান। তখন তাঁর ইজিবাইকে এক যাত্রী ছিলেন। তাঁরা দুজন টাকার থলে নিয়ে রামনগর এলাকায় ইজিবাইকচালকের বাড়িতে যান। পরে শহরে টাকা হারানোর বিষয়ে মাইকে প্রচার করা হয়। তখন মাইকে জানানো মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করে টাকার খোঁজ দেন ইজিবাইকের যাত্রী। পরে ওই যাত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামসহ ফল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা ইজিবাইকচালক ইসমাইলের বাড়িতে যান। এর মধ্যে ইজিবাইকচালক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসানকে বিষয়টি জানান। পরে থানায় বসে ওসি আবদুর রাজ্জাকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীকে ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

হারিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পেয়ে খুশি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেভাবেই হোক হারিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পেয়েছি। আমি ভীষণ খুশি। আমার কাছে ইজিবাইকচালক ও টাকার সন্ধান দেওয়া যাত্রী দুজনই সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমি খুশি হয়ে দুজনকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছি।’

জানতে চাইলে ওসি আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, মণিহার এলাকার রাস্তায় প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পান যশোর শহরতলির রামনগর গ্রামের ইজিবাইকচালক শেখ ইসমাইল আলী। অন্যদিকে টাকার থলে হারানো ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। একই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেন। পরে ইজিবাইকের ওই চালক টাকার থলে ফেরত দেন।