মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু

মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রছবি: সংগৃহীত।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে কোল পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হয়ে থেকে বাণিজ্যিকভাবে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায় প্রথম ইউনিট।

আজ দুপুরে কোল পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৯ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ইউনিটে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। পরে ১৮ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। আজ থেকে শুরু হলো দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে মাতারবাড়ীর ১ হাজার ৬০০ একরের পরিত্যক্ত লবণ মাঠে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা দিচ্ছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিডেট। গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়ীর আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির মাতারবাড়ী সাইট অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, প্রথম দিকে জ্বালানি তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এর জন্য অন্তত ১ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল প্রয়োজন। চার-পাঁচ দিন পর কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগবে। আর দুই ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কয়লা লাগবে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন। এই প্রকল্পের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৪টি জাহাজে করে ৮ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আনা হয়েছে।

মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন মজুমদার আরও বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ বছরের ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক ছাই পুকুর রাখা হয়েছে। এর একটির আয়তন ৯০ একর ও অন্যটি ৬০০ একর। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। আগাম ৬০ দিনের কয়লা মজুত রাখার জন্য আট লাখ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এখন পাঁচ লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুত রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির মাতারবাড়ী সাইট অফিসের প্রধান প্রকৌশলী মুহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমিতমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন ও আইএইচআইসহ প্রকল্পের নির্মাণকাজে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন কাজ করছেন।