টানা বৃষ্টি ও উচ্চ জোয়ার
বাগেরহাটে ভেসে গেছে চার হাজারের বেশি ঘেরের মাছ
কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ২৩০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
টানা বৃষ্টিপাত ও উচ্চ জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের চিংড়িচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে জেলার চার হাজারের বেশি ঘের। তবে এবারের বৃষ্টিতে কৃষি ক্ষেত্রে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি বলছে কৃষি বিভাগ। এক সপ্তাহ পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির তীব্রতা কমায় কিছু এলাকার পানি কমতে শুরু করেছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ২৩০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৭৫টি, কচুয়ায় ৬৪০, শরণখোলায় ১০০, রামপালে ১ হাজার ৫৪০, মোরেলগঞ্জে ৮৫৫ ও মোংলায় ৭২০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।
সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮২৫ একর জমিতে থাকা ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের এই ক্ষয়ক্ষতির হিসাবের বাইরেও অনেক এলাকার ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে দাবি মৎস্যচাষিদের।
রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের তালপুকুর এলাকার ঘেরের মালিক রমজান আলী বলেন, ‘জোয়ারের পানি তেমন প্রভাব ফেলতে না পারলেও বৃষ্টির পানি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। বেড়ি (আইল) তলায়ে ঘের থেকে মাছ সব বের অয়ে গেছে।’
বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফকির আবদুল্লাহ বলেন, ‘পানিতে অনেকের ঘের তলিয়ে গেছে। পানির চাপে কারও কারও ঘেরের বাঁধ ভেঙে গেছে। আমার নিজের ঘেরও তলিয়েছে। এককথায় আমার ইউনিয়নের মাছচাষিরা বেশ বিপদে পড়েছেন এই বৃষ্টিতে।’
বাগেরহাট সদরের কাশেমপুর এলাকার মৎস্যচাষি মো. কবির হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে তাঁর ডেমা বিলের প্রায় ২০ বিঘা জমিতে থাকা ঘেরের চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে গেছে। এতে তাঁর প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে পানি বাড়তে থাকায় ঘেরের চারপাশে নেট জাল দিয়ে মাছ রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্রোতের তোড়ে সেই জাল ছিঁড়ে মাছ ভেসে গেছে।’
এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টি না থাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সড়কের ওপর থাকা পানি নেমে গেছে। পানি নেমে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার শিকার পরিবারের সংখ্যাও কমেছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোববার পর্যন্ত ৭ হাজার ৫১০টি পরিবার পানিবন্দী ছিল। সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক এলাকার পানি নেমে গেছে।’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, ‘বৃষ্টিতে জেলার ৪ হাজার ২৩০টি ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। এতে আমাদের চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।