মিয়ানমার থেকে গুলি, নাইক্ষ্যংছড়িতে ভাঙল অটোরিকশার কাচ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশার কাচ
ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি অটোরিকশার সামনের কাচ ভেঙে গেছে। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার তুমব্রুর উত্তর পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ বেলা পৌনে তিনটা থেকে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় একটি গুলি এসে অটোরিকশাটিতে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। বিকেল চারটা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গোলাগুলির কারণে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

অটোরিকশাচালক আবু তাহের বলেন, তিনি গাড়ি রেখে চা খেতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে গাড়িতে ওঠার মুহূর্তে একটি গুলি তাঁর অটোরিকশার কাচে এসে পড়ে। এতে কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, মিয়ানমারে বিদ্রোহী দল আরকান আর্মি ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে এই গোলাগুলি চলছে। যে এলাকা থেকে গোলাগুলির শব্দ আসছে, সেখানে বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্প এবং ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি অবস্থিত। এই দুটি স্থাপনা ছাড়া আশপাশের প্রায় ৪৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিজিপির বাকি সব চৌকি আরাকান আর্মি এরই মধ্যে দখলে নিয়েছে। বাকি দুটি স্থাপনা দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে আরাকান আর্মির হামলা চলছে। আজ সকাল থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ওপারে সশস্ত্র ব্যক্তিদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছিল।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মিয়ানমারের ওই দুটি সীমান্তচৌকিতে আগে এত প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। এবার গোলাগুলির শব্দের তীব্রতা বেশি হওয়ায় সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ ও ৩১ জানুয়ারি দুবার বিজিপির ওই দুটি স্থাপনায় আক্রমণ চালানো হয়। ওই সময় বিস্ফোরিত মর্টার শেল ও গোলার অন্তত চারটি অংশ বাংলাদেশের তুমব্রু, কোনারপাড়া ও পশ্চিম ঘুমধুমে এসে পড়ে। এরপর জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, রাখাইন রাজ্যে গোলযোগপূর্ণ অবস্থা চলছে। খুব স্বাভাবিকভাবে সীমান্তবর্তী এলাকায়ও গোলাগুলি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বিজিবি, পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।