আন্দোলনের মুখে যোগ দিতে পারেননি সিরাজগঞ্জের আইএমটির নতুন অধ্যক্ষ

ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন সিরাজগঞ্জের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ মুলিবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের ১ নম্বর চেকপোস্ট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও আন্দোলনের মুখে নতুন অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে (আইএমটি) যোগদান করতে পারেননি। আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ফটকে তালা লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সামনে সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ মুলিবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের ১ নম্বর চেকপোস্ট এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। পরে যোগদান না করেই অধ্যক্ষকে ফিরে যেতে হয়।

অবরোধের কারণে সড়কে অসংখ্য যানবাহনের জটলা তৈরি হয়। নতুন অধ্যক্ষ যাতে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য মূল ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেন। এ সময় সড়কে আগুন জ্বালানো হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রায়হান কবির ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। রায়হান কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী বকতিয়ার হোসেন ও জুবায়ের হোসেন বলেন, আজ আইএমটিতে নতুন অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম যোগদানের জন্য এসেছিলেন। তিনি যাতে যোগদান করতে না পারেন, সে জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। নতুন অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ। তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, ইতিমধ্যে তিনি বাগেরহাটের আইএমটি, নারায়ণগঞ্জের বিআইএমটিসহ তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতি করায় তাঁকে বদলি করা হয়েছে। সর্বশেষ তাঁদের প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত করা হয়। এমন দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ তাঁরা চান না, সে জন্য তাঁরা রাস্তায় নেমে এসেছেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের আইএমটির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাঁকে বদলি করে তাঁদের প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি যেন তাঁদের প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি মুঠোফোনে কথা বলতে পারব না। পরে সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাব।’

সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ মুলিবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের ১ নম্বর চেকপোস্ট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষকদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিক্ষার্থীরাই বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এই আন্দোলন শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের নিষেধ করলেও কোনো লাভ হয়নি।

ঢাকায় কর্মরত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহকারী মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে নতুন অধ্যক্ষ ওই প্রতিষ্ঠানে যোগ দান করছেন না। ইতিমধ্যে ওই অধ্যক্ষকে যোগদান করতে নিষেধ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।