নাটোরে রেলকর্মীদের মারধরের অভিযোগে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৪
নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলস্টেশনের কর্মীদের মারধর ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন সহকারী স্টেশনমাস্টার। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আটক চার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার সকালে আজিমনগর রেলস্টেশনে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ, রেললাইন অবরোধ, স্টেশন ভাঙচুর ও রেলকর্মীদের মারধর করেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তি। এ ঘটনায় সহকারী স্টেশনমাস্টার আমিনুল ইসলাম গতকাল রাতে বাদী হয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানায় মামলাটি করেন। এর মধ্যে অবরোধ চলাকালে পুলিশের হাতে আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী আমলি আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লালপুর উপজেলার মধুবাড়ি গ্রামের মো. নাদিম আলম (৩০), একই গ্রামের শরিফুল কবির ওরফে সজীব (৩৪), কালুপাড়া গ্রামের আহমেদ রেদুয়ান (১৮) ও গোপালপুর বাজারের আবদুল মোমিন (১৯)। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে রেলকর্মীদের মারধর, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিহির রঞ্জন আজ বেলা ১১টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি তদন্ত করে অবিলম্বে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে আজ সোমবার সকাল থেকে আজিমনগর স্টেশনে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। স্টেশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। তবে রেলস্টেশনকর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে রেলকর্মীরা ঈশ্বরদী রেল নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল আটটা থেকে লালপুর উপজেলাবাসীর ব্যানারে শতাধিক মানুষ আজিমনগর রেলস্টেশনে জড়ো হন। তাঁরা আজিমনগরে ঢাকা-চিলাহাটি যাতায়াতকারী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি দাবি করে স্লোগান দেন এবং বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁদের ট্রেনটির যাত্রাবিরতির দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার প্রদর্শন করতে দেখা যায়। সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন রেললাইনের ওপর শুয়ে পড়েন এবং লাল পতাকা ঝুলিয়ে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে দেন। ১০ মিনিট পর ট্রেনটি গন্তব্যে ছেড়ে যায়। এর পরপরই তাঁরা খুলনা-চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও থামিয়ে দেন। এ ট্রেনও ১০ মিনিট বিরতির পর গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
একইভাবে তাঁরা দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন থামানোর জন্য রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন। কিন্তু ট্রেনটি না থামিয়ে দ্রুত স্টেশন ত্যাগ করে। এ সময় কয়েক বিক্ষোভকারী অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। এ ঘটনায় লোকজন আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা রেলওয়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে স্টেশনের জানালা-দরজায় কিছু ভাঙচুর করেন এবং দুজন স্টেশন সহকারীকে চড়থাপ্পড় মারেন। এ সময় রেল পুলিশ চার বিক্ষোভকারীকে আটক করে লালপুর থানায় নিয়ে যায়।