অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুলের মৃত্যুর ১১ দিন পর সন্তান জন্ম দিলেন স্ত্রী
ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদা নিজের তৃতীয় সন্তানের অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখার আগেই আগুন নেভাতে গিয়ে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয় তাঁকে। তাঁর মৃত্যুর ১১ দিন পর আজ স্ত্রী আসমা খাতুন পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি সন্তান জন্ম দেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মারা যান নুরুল হুদা। পরদিন সকালে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল গ্রামের নিজ বাড়ির কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। নুরুল হুদা টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ফাইটার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি চাকরিতে যোগ দেন ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ। মৃত্যুর সময় মা, বাবা, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, ১০ বছরের এক মেয়ে ও ৩ বছরের এক ছেলে রেখে যান নুরুল হুদা।
স্বজনেরা জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আসমা খাতুনকে রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা পর্যালোচনা শেষে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসমা খাতুনের অস্ত্রোপচার করেন। পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দীসহ ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী পরিবারটির পাশে ছিলেন।
নুরুল হুদার বাবা আবুল মুনসুর বলেন, ‘আমি ছেলে হারাইলাম, আমার ছেলের সন্তান জন্ম নিল এতিম হয়ে। সে তার সন্তানকে দেখে যেতে পারল না। আল্লাহ সব পরিকল্পনাকারী, তিনিই আমার নাতিকে দেখে রাখবেন।’
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘আসমা খাতুন নামের প্রসূতি গতকাল ভর্তি হওয়ার পর আজ সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও নবজাতক দুজনই ভালো আছে। দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকসহ আমরা নবজাতক ও মায়ের খোঁজখবর নিয়ে এসেছি।’