মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য চাচাতো ভাইকে হত্যা

আরিফ হত্যা ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মিয়া ও তাঁর সহযোগী হাফিজুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আরিফ মিয়া (২১) নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার চাচাতো ভাই মো. জাহাঙ্গীর মিয়া (৩৩) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলাম জবানবন্দি রেকর্ড করার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি সেতুর নিচ থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আরিফ উপজেলার নঙ্গিনাবাড়ী গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মো. হোসেন মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় মামলা করেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাফিজুর রহমান (৩৩) নামের আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাহাঙ্গীর নাগরপুর উপজেলার নঙ্গিনাবাড়ী গ্রামের আলহাজ উদ্দিনের ছেলে। আর হাফিজুর দেলদুয়ার উপজেলার দুল্লা গ্রামের মোকছেদুর রহমানের ছেলে।

আদালতে জবানবন্দিতে জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, মোটরসাইকেল ছিনতাই করার জন্য নিজের চাচাতো ভাই আরিফ মিয়াকে (২১) ঘুমের বড়ি খাইয়ে হত্যা করেন তিনি। পরে ছিনতাই করা মোটরসাইকেল হাফিজুর রহমানের (৩৩) কাছে বিক্রি করেন।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ স্বীকারোক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, নঙ্গিনাবাড়ী গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মো. হোসেন মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া (২১) নিজের মোটরসাইকেলে ৮ আগস্ট চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর মিয়ার সঙ্গে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা হন। পরদিন জাহাঙ্গীর বাড়ি ফিরলেও আরিফ ফেরেননি। এ ঘটনায় ১০ আগস্ট আরিফের চাচা হাসান মিয়া নাগরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত শুক্রবার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার হয়। পরে তাঁর বাবা বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ শুক্রবার জাহাঙ্গীর মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর জানান, আরিফের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্যই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জাহাঙ্গীর। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ আগস্ট আরিফকে সঙ্গে নিয়ে টাঙ্গাইলে যান। পরে সেখান থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে জুসের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে আরিফকে কৌশলে পান করান। এতে আরিফের মৃত্যু হয়। তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে তিল্লি সেতুর নিচে ফেলে দেন। মোটরসাইকেলটি তিনি হাফিজুরের কাছে পরদিন বিক্রি করেন। জাহাঙ্গীর আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। শনিবার বিকেলে তাঁকে টাঙ্গাইল আদালতে নেওয়া হয়।