জয়পুরহাটে মাদ্রাসাশিক্ষককে মারধর, দুই ভাইয়ের ১৫ দিনের কারাদণ্ড

মারধরপ্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধরের দায়ে দুই সহোদরকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কালাই পৌর শহরের কালাই আহলে হাদিস মসজিদ মার্কেটে ওই ঘটনার পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের এই সাজা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আক্তার। এদিকে ওই শিক্ষককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম সেলিম রেজা। তিনি উপজেলার হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কালাই পৌর শহরের আহলে হাদিস মসজিদের খতিব। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তির নাম আবদুল্লা আল মাহমুদ (৩৮) ও তাঁর ছোট ভাই নূর মোহাম্মদ (৩৫)। তাঁরা কালাই পৌর এলাকার থুপসাড়া মহল্লার বাসিন্দা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আবদুল্লা আল মাহমুদের স্ত্রী হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করছেন। গতকাল সকালে স্ত্রীর কামিল পাসের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র নিতে মাদ্রাসাটিতে যান আবদুল্লা। এ সময় সেলিম রেজার সঙ্গে আবদুল্লার কথা–কাটাকাটি হয়। পরে সেখান থেকে চলে যান আবদুল্লা। একপর্যায়ে সেলিম রেজা মাদ্রাসা থেকে কালাই আহলে হাদিস মসজিদ মার্কেটে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান। সেখানে গিয়ে সেলিম রেজাকে মারপিট করেন আবদুল্লা। পরে আবদুল্লার ছোট ভাই নূর মোহাম্মদও সেখানে গিয়ে মারপিটে অংশ নেন। এতে সেলিম রেজা আহত হন। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই দুই হামলাকারীকে মার্কেটটির ভেতর অবরুদ্ধ করেন।

খবর পেয়ে ইউএনও শামীমা আক্তার, কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতাকে শান্ত করেন। পরে অভিযুক্ত আবদুল্লা ও নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁদের ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সেলিম রেজা দোকানে বসে আছেন। এক ব্যক্তি দোকানে গিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করার পর তাঁর গালে জোরে চড় মারতে থাকেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্য ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সেলিম রেজা দোকানের সামনে পড়ে পড়ে যান। এ সময়ও তাঁকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে সেলিম রেজার মুঠোফোনে কল করা হলে জনি তালুকদার নামের এক ব্যক্তি নিজেকে তাঁর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বলেন, সেলিম রেজা হুজুর মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর একটি হাত ভেঙে গেছে। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

এদিকে সাজাপ্রাপ্ত ওই দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন।