ত্রিশালে নারী-শিশুসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার

আলী হোসেনছবি সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাকচর গ্রাম থেকে এক নারী ও দুই শিশুর মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আলী হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আলী হোসেন উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং লাশ উদ্ধার হওয়া নারী আমেনা খাতুনের (৩০) স্বামী। গত মঙ্গলবার বিকেলে গ্রামের নির্জন এলাকা থেকে আমেনা ও তাঁর দুই শিশুসন্তান আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও আনাছের (২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আলী হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে তিনটায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন। তিনি আলী হোসেনের গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১২ সালের একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি আলী হোসেন। ওই মামলায় টানা পাঁচ বছর কারাভোগ করে ২০১৭ সালের আগস্টে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর ২০১৯ সালে আপন মামাতো বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করে দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছিলেন। দুই সন্তানের জন্মের পর সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন বলেন, সম্প্রতি বেসরকারি একটি সংস্থা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন আলী হোসেন। ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই তাঁরা অপমানিত হতেন। একপর্যায়ে হতাশা থেকে স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। ১৬ মে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রাতেই স্ত্রী আমেনা খাতুনকে ঘুম থেকে তুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন আলী। এরপর একই ওড়না দিয়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।

গত মঙ্গলবার বিকেলে কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে একটি নির্জন স্থানে শিয়ালের টানাহেঁচড়ায় মানুষের হাড় বেরিয়ে আসে। স্থানীয় লোকজন মানুষের হাড় দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ মাটি খুঁড়ে এক নারী ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই রাতেই নিহত আমেনার মা হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গতকাল বিকেলে গাজীপুর থেকে আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।