চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মিনু আক্তার (৪২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাঁর স্বামী ফরিদুল আলমের (৪৪) মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান তিনি।
ফরিদুল বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে। ডোংরা গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার বাহারছাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ইলশা এলাকা থেকে ফরিদুলকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। ওই সময় গণপিটুনি দেন জনতা। গণপিটুনিতে ফরিদুল গুরুতর আহত হলে তাঁকে চমেক হাসপাতাল ভর্তি করা হলে সেখানে আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, স্ত্রী হত্যার পর মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক পান করেন ফরিদুল। ওই সময় লোকজনকে তিনি কীটনাশক পানের কথা বলেন। তবে তা বিশ্বাস করেননি কেউ। উল্টো লোকজন তাঁকে ধরে পিটুনি দেন। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি। এর আগে, ১১ এপ্রিল ভোর সাড়ে চারটার দিকে স্ত্রী মিনু আক্তারকে (৪২) হত্যার অভিযোগ ওঠে ফরিদুলের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের মার্চ মাসে মিনু আক্তারের সঙ্গে ফরিদুল আলমের বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ব্যবসায়িক কারণে ফরিদুল চট্টগ্রাম শহরে থাকতেন এবং মাঝেমধ্যে বাড়ি যেতেন। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো। প্রায় সময়ই ফরিদুল আলম টাকার জন্য মিনুকে মারধর করতেন এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলতেন।
সর্বশেষ গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যার পর মিনু বাপের বাড়ি বেড়াতে যান। কিন্তু পরদিন শুক্রবার ভোরেই ফরিদুল আলম তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানেই তিনি মিনু আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। ওই সময় মিনুর চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে ফরিদুল পালিয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে মিনুকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় মিনুর ভাই নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা মামলার আসামি ফরিদুল আলম ঘরে গিয়ে কীটনাশক পান করেন। ওই সময় জনতা তাঁকে পিটুনি দিলে আজ ভোরে তিনি মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হচ্ছে।