গাইবান্ধার ঘাঘট নদ
সাঁকোয় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার
২০১৮ সালের মাঝামাঝি সাঁকো নির্মাণের কাজ শেষ হয়। পাঁচ বছরে সাঁকোটি আর মেরামত করা হয়নি।
এ পারে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ছাট নারায়ণপুর, নারায়ণপুর, খোলাবাড়ি, উত্তর নারায়ণপুর ও কাজলঢোপ গ্রাম। ওপারে খোলাহাটি ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া, মোল্লাবাজার, ফারাজিপাড়া, রথেরবাজার, বড়ইপাড়া, কুমারপাড়া ও মাঠবাজার গ্রাম। মাঝে বয়ে গেছে ঘাঘট নদ। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও এখানে সেতু নির্মিত হয়নি।
এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে নদীর ওপর কাঠের সাঁকো তৈরি করে নদী পারাপার হন। দুই ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। ওই সাঁকোতেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে তাঁদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বল্লমঝাড় ও খোলাহাটি ইউনিয়নের লোকজন নৌকায় ঘাঘট নদ পার হতেন। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে দুই ইউনিয়নের লোকজন নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেন। কেউ টাকা, কেউ বাঁশ, কেউ গাছ, কাঠ, রশি দিয়ে সহায়তা করেন। আর্থিক সহায়তা দেন গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুব আরা বেগমও। এতে খরচ হয় প্রায় ১১ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সাঁকো নির্মাণের কাজ শেষ হয়। শুরুতে সাঁকোর ওপর দিয়ে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান চলাচল করত। গত দেড় বছর সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। প্রায় পাঁচ বছরে সাঁকোটি আর মেরামত করা হয়নি। ফলে সাঁকোর অনেক খুঁটির নিচের অংশ পানিতে নষ্ট হয়েছে। অনেক স্থানে পাটাতনের কাঠ খুলে গেছে। কয়েকজন একসঙ্গে উঠলে সাঁকোটি দোল খায়। ঝুঁকি এড়াতে ও সতর্ক করতে সাঁকোতে উঠার আগে একটি নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে ছাট নারায়ণপুর গ্রাম। গত শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত ঘাঘট নদে সামান্য স্রোত। সাঁকোর কাঠের খুঁটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। কয়েকজন উঠলেই সাঁকোটি দোল খাচ্ছে। কেউ মালপত্র মাথায় নিয়ে, কেউ বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল ঠেলে নদ পার করছেন।
ছাট নারায়ণপুর গ্রামের মুদিদোকানি সোবহান মিয়া (৬০) বলেন, এখানে সেতু নির্মাণে অসংখ্যবার জনপ্রতিনিধিদের আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের সাড়া পাওয়া যায়নি। নড়বড়ে সাঁকোয় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) গাইবান্ধা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম বলেন, ছাট নারায়ণপুর এলাকায় ঘাঘট নদের ওপর সেতু নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রকল্প তৈরি করতে বলা হয়েছে।